Saturday, July 27, 2024
গাইডব্লগ

কন্টেন্ট মার্কেটিং কী? কন্টেন্ট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবেন?

বর্তমান সময়ে পড়ালেখা থেকে শুরু করে ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছুই অনলাইন ভিত্তিক হয়ে গেছে৷ আর এই অনলাইনের যুগে ব্যবসার প্রসার ঘটাতে প্রতিনিয়ত আমাদেরকে নতুন নতুন মার্কেটিং কৌশল উদ্ভাবন করতে হয়৷ তেমনই একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার হলো ডিজিটাল মার্কেটিং। ব্যবসার ক্ষেত্রে বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং এতোটা জনপ্রিয় এবং প্রয়োজনীয় হয়ে পরেছে যে প্রতিনিয়তই এর ক্ষেত্রগুলো আরো বিস্তৃত হচ্ছে। তেমনই একটি ক্ষেত্র হলো কন্টেন্ট মার্কেটিং। 

ব্যবসার প্রচার ও প্রসারে কন্টেন্ট মার্কেটিং বর্তমানে অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম হিসাবে জায়গা দখল করেছে। আজকে আমরা কন্টেন্ট মার্কেটিং কী, এটি কীভাবে কাজ করে এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলি সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে চেষ্টা করবো। 

কন্টেন্ট মার্কেটিং কী?

কন্টেন্ট মার্কেটিং কী

কন্টেন্ট মার্কেটিং সম্পর্কে জানতে হলে প্রথমেই আমাদেরকে জানতে হবে কন্টেন্ট মার্কেটিং বলতে কী বোঝায়। একদম সহজভাবে বললে, আপনার ব্যবসা, পণ্য বা সেবা বা ব্র্যান্ডের প্রচার ও প্রসারের জন্য আকর্ষণীয় কন্টেন্ট তৈরির মাধ্যমে তা টার্গেট অডিয়েন্স বা গ্রাহকের কাছে পৌঁছানোর প্রক্রিয়াই হলো কন্টেন্ট মার্কেটিং। অর্থাৎ, আপনার পণ্য বা সেবা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় সকল তথ্য দিয়ে আকর্ষণীয় কন্টেন্ট বানিয়ে তা গ্রাহকের কাছে পৌঁছাতে যে মার্কেটিং করা হয়, তাকেই বলা হয় কন্টেন্ট মার্কেটিং। 

এখন কথা হচ্ছে এই যে কন্টেন্ট তৈরি করা, সেটা আসলে কী? এই কন্টেন্টটি হতে পারে কোনো আর্টিকেল, অডিও, ভিডিও ইত্যাদি । ধরুন আপনি আপনার পণ্য বা সেবার প্রচারের জন্য একটি আকর্ষণীয় ভিডিও তৈরি করলেন যেখানে আপনি আপনার সেবা সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য দিয়েছেন। এটিকে বলা হয় ভিডিও কন্টেন্ট। আবার একই কাজটি যদি আপনি কোনো অডিও প্রকাশ করে সেটির মাধ্যমে করেন তখন তাকে বলা হয় অডিও কন্টেন্ট৷

আর এই কন্টেন্ট গুলো যখন আপনি কোনো ওয়েবসাইট বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা অন্য কোনো প্লাটফর্মে প্রকাশ করবেন তখন তা অসংখ্য মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে। ফলে মানুষ সেটির ব্যাপারে জানতে পারবে। আপনি যদি আপনার উপস্থাপনা ও সৃজনশীলতা দিয়ে গ্রাহকের মন জয় করে নিতে পারেন, তাহলে গ্রাহক আপনার সেবা নিতে উৎসাহিত হবে এবং আপনার কন্টেন্ট মার্কেটিংটি সফল হবে।

কন্টেন্ট মার্কেটিং কেন করবেন?

কন্টেন্ট মার্কেটিং কেন

কন্টেন্ট মার্কেটিং কী সে সম্পর্কে আমরা জানলাম। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা কন্টেন্ট মার্কেটিং কেন করবো? আসলে, আপনি যেকোনো কিছুই প্রমোট বা প্রচার করুন না কেনো সেটার জন্য আপনার একটি সুন্দর এবং আকর্ষণীয় কন্টেন্ট প্রয়োজন হয়। ধরুন, আপনি সোশ্যাল মিডিয়াতে বা গ্রাহকের ইমেইলে আপনার পণ্যের প্রচারণা চালাতে চাচ্ছেন। সেক্ষেত্রেও আপনার একটি সুন্দর কন্টেন্ট প্রয়োজন হবে।

মানুষ ইদানীং বিজ্ঞাপন বা এডভার্টাইসমেন্ট দেখতে পছন্দ করেনা। অনেকে তো এটি থেকে মুক্তি পেতে এড ব্লকার সফটওয়্যারও ব্যবহার করে। ভুলে ক্লিক বা চাপ পরে না গেলে বেশিরভাগ মানুষই এই বিজ্ঞাপনগুলো এড়িয়ে চলে৷ তাই নিজেদের প্রচার ও প্রসারের জন্য ব্যবসায়িরা বিজ্ঞাপনের নতুন নতুন কৌশল খুঁজে থাকেন। আর তাদের এই সমস্যার যুগান্তকারী সমাধান হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে কন্টেন্ট মার্কেটিং৷ এজন্য বর্তমানে কন্টেন্ট মার্কেটিংকে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের প্রাণ বলা হয়।

বর্তমানে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায়ীদেরকে প্রায় সবসময়ই কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের আশ্রয় নিতে হয় কারণ:

  • গ্রাহকের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরিতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 
  • আপনার পণ্যের বৈশিষ্ট্য, গুণাবলি বোঝাতে এবং কীভাবে তা গ্রাহকের বিভিন্ন চাহিদা পূরণ ও সমস্যার সমাধান করতে পারে এগুলো বোঝাতে কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের বিকল্প নেই। 
  • ভালো এবং আকর্ষণীয় কন্টেন্ট তৈরি করতে পারলে আজকে যারা ভিজিটর হিসেবে আপনার মার্কেটিংটি দেখছে, কালকে তারা গ্রাহকে পরিণত হতে পারে। 
  • ইউটিউব ভিডিও, ইমেইল মার্কেটিং, বিজ্ঞাপনসহ প্রায় সবকিছুতেই আকর্ষণীয় এবং গ্রহণযোগ্য কন্টেন্টের প্রয়োজন হয়। 
  • কন্টেন্ট মার্কেটিং অনেক সাশ্রয়ী৷ এই ক্ষেত্রে আপনাকে খুবই কম বিনিয়োগ করতে হয়। 
  • আপনার পণ্য বা সেবার চাহিদা বাড়াতে এবং ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়াতে কন্টেন্ট মার্কেটিংয় অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে৷ 
  • সহজেই টার্গেট অডিয়েন্স নির্ণয় করা যায়৷ 
  • নিজের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বা ব্র্যান্ডের নির্ভরযোগ্যতা এবং বিশ্বস্ততা তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। 
  • আপনার পণ্য বা সেবার কথা দ্রুততম সময়ের মধ্যে অনেক মানুষের কাছে পৌঁছাতে সাহায্য করে।

এই সকল কারণে বর্তমানে ব্যবসায়ীদের জন্য কন্টেন্ট মার্কেটিং খুবই জরুরি হয়ে পরেছে৷ 

কন্টেন্ট মার্কেটিং কীভাবে কাজ করে?

কন্টেন্ট মার্কেটিং কীভ

কন্টেন্ট মার্কেটিং কী এবং কেন প্রয়োজন সে সম্পর্কে আমরা জানলাম। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কন্টেন্ট মার্কেটিং যে করবো এটি আসলে ঠিক কীভাবে কাজ করে? অর্থাৎ, এই মার্কেটিং প্রক্রিয়াটি আসলে কেমন?

নিচে এর ধাপগুলো পর্যায়ক্রমে আলোচনা করা হলো :

যথাপযুক্ত এবং তথ্যবহুল কন্টেন্ট তৈরি

কন্টেন্ট মার্কেটিং করার সর্বপ্রথম ধাপ হলো যথাপযুক্ত এবং তথ্যবহুল কন্টেন্ট তৈরি করা। আপনি যদি আপনার ব্যবসার প্রচারের জন্য এই মার্কেটিং কৌশলটি ব্যবহার করতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই যথাপযুক্ত এবং তথ্যবহুল কন্টেন্ট তৈরি করতে হবে। মানুষ অসম্পূর্ণ বা এমন কন্টেন্ট পছন্দ করে না যেখানে আপনি যে পণ্য বা সেবার প্রচারণা করছেন, সেটার যাবতীয় তথ্য নেই। এজন্য আপনাকে এমন কন্টেন্ট তৈরি করতে হবে যেখানে আপনার পণ্যের বিস্তারিত বিবরণ এবং এর সাথে সম্পর্কিত সকল জিজ্ঞাসার উত্তর রয়েছে৷ 

কন্টেন্টটি অনলাইন প্লাটফর্মে শেয়ার করতে হবে

আপনি যখনই কোনো কন্টেন্ট তৈরি করবেন, তখন আপনাকে সেটা আপনার অডিয়েন্সের সাথে শেয়ার করতে হবে। সেটা আপনি ওয়েবসাইটে পাবলিশ করুন বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বা অন্য যেকোনো প্লাটফর্মে, আপনার কন্টেন্ট যেনো মানুষের কাছে পৌঁছায় সেটা আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে। তাছাড়া কন্টেন্টটি আপনার নিজস্ব প্লাটফর্ম এবং আপনার দ্বারাও বেশি বেশি শেয়ার করাতে পারেন যাতে সেটি বেশি মানুষের কাছে পৌঁছায়।

তাছাড়া আপনি যদি কোনো অভিজ্ঞ ব্যবসায়ী বা জনপ্রিয় ব্যক্তিবর্গের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন, তাহলে তাদের মাধ্যমেও সেটা শেয়ার করতে পারেন। কারণ তাদেরকে, তাদের কথা এবং কাজকে অসংখ্য মানুষ অনুসরণ করে এবং গুরুত্ব দেয়। তারা যদি এটি শেয়ার করে তাহলে আপনার কন্টেন্টটি অসংখ্য মানুষের কাছে পৌঁছাবে এবং মানুষ সেটির ব্যাপারে জানতে পারবে। 

মানুষ অনলাইনে আপনার ব্যবসা, পণ্য এবং সেবা সম্পর্কে তথ্য অনুসন্ধান করবে

আপনি যখন ভালো একটি কন্টেন্ট তৈরি করবেন এবং তা অসংখ্য মানুষের কাছে পৌঁছাবে, তখন মানুষ সেটির ব্যাপারে কৌতুহলী হবে। তারা তখন অনলাইন প্লাটফর্মগুলোতে আপনার ব্যবসা, পণ্য এবং সেবা সম্পর্কে তথ্য অনুসন্ধান করা শুরু করবে।

যখন মানুষ আপনার ওয়েবসাইটে বা প্লাটফর্মে ভিজিট করবে তখন তাদের কাছে যদি আপনার কন্টেন্টগুলো পছন্দ হয়, তখন তারা আপনার সেবার ব্যাপারে আরো বেশি উৎসাহিত হবে। এভাবে ধীরে ধীরে আপনার ব্যবসা, পণ্য বা সেবার কথা সর্বত্র ছড়িয়ে যাবে।

মানুষ যদি আপনার কন্টেন্ট থেকে উপকৃত হয়, তাহলে তারাই আপনার পণ্যটিকে একটি ব্র্যান্ডে রূপান্তর করে দিবে। তাছাড়া আকর্ষণীয় কন্টেন্ট তৈরি করতে পারলে আপনার সাইটের নতুন ভিজিটররাও একসময় আপনার গ্রাহকে রূপান্তরিত হবে। এভাবে গ্রাহকের সাথে আপনার এবং আপনার পণ্য বা সেবার একটি সম্পর্ক তৈরি হবে। ফলশ্রুতিতে ধীরে ধীরে আপনার ব্যবসায়িক উন্নতি ঘটতে থাকবে।

এভাবেই মূলত কন্টেন্ট মার্কেটিং কাজ করে। 

কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের প্রকারভেদ

একটি ভালো মানের কন্টেন্ট তৈরি করতে প্রয়োজন হয় যথেষ্ট মেধা, সৃজনশীলতা এবং পরিশ্রম। আর মার্কেটাররা এই ভালো কন্টেন্ট তৈরি করতে বিভিন্ন রকম মাধ্যম ব্যবহার করেন, যেগুলোকে মূলত কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের প্রকারভেদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়৷ নিম্নে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো :

  • ব্লগিং

আপনি যদি আপনার গ্রাহককে আপনার ব্যবসা, পণ্য বা সেবা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে চান, সেক্ষেত্রে ব্লগিংই হতে পারে আপনার প্রথম পছন্দ৷ একজন লেখকের অবশ্যই এই গুণাবলি থাকা উচিত যে তিনি যেনো অডিয়েন্সকে তাঁর লেখনী দ্বারা মুগ্ধ করে রাখতে পারেন। একজন ব্লগার যদি নিজের মেধা ও সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে একটি তথ্যবহুল এবং আকর্ষণীয় কন্টেন্ট তৈরি করতে পারেন, তাহলে গ্রাহক আপনার পণ্য বা সেবার ব্যাপারে আগ্রহবোধ করবে।

আপনার ব্লগপোস্টটি এমন হতে হবে যেনো সেখানে আপনার ব্যবসা, পণ্য বা সেবা সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য এবং গ্রাহকের সকল জিজ্ঞাসার উত্তর থাকে৷ ব্লগ এমন একটি প্লাটফর্ম যা আপনার পাঠককে গ্রাহকে রূপান্তর করে ফেলতে পারে। তাছাড়া ব্লগিংয়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সাথে গ্রাহকের একটি ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়, ব্র্যান্ড ভ্যালু বৃদ্ধি পায়।

ব্লগ কন্টেন্ট পোস্ট করার পর তা সোশ্যাল মিডিয়া এবং অন্যান্য অনলাইন প্লাটফর্মগুলোতে শেয়ার করে ছড়িয়ে দেওয়া উচিত। যত বেশি শেয়ার হবে, তত বেশি মানুষ এই কন্টেন্টটির ব্যাপারে জানবে।

  • ভিডিও কন্টেন্ট

কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হলো ভিডিও কন্টেন্ট। আপনি যখন কোনো ব্লগ পড়বেন, বা রেডিওতে বিজ্ঞাপন শুনবেন, তখন আপনি কেবল পণ্যটির ব্যাপারে শুনতেই পারবেন৷ পণ্যটি আসলে দেখতে কেমন, পণ্যের যে রকম বর্ণনা দেওয়া হয়েছে তার সাথে পণ্যটি মিলে কিনা এই বিষয়গুলো আপনার জানা থাকবেনা। 

কিন্তু ভিডিও কন্টেন্টে আপনি একই সাথে পণ্যটি দেখতে এবং তার গুণাবলি শুনতে পারবেন। এবং নিজেই যাচাই বাছাই করে নিতে পারবেন যে বিবরণের সাথে পণ্যটি মিলছে কিনা এবং পণ্যটি আপনার পছন্দসই কিনা। তাছাড়া দীর্ঘক্ষণ ধরে ব্লগ পড়ার চেয়ে একটি সংক্ষিপ্ত, সাবলীল এবং আকর্ষণীয় ভিডিও দেখা গ্রাহকের কাছে অধিকতর প্রাধান্য পায়। 

একটি সমীক্ষা মতে, পৃথিবীর প্রায় ৭৫০ কোটি মানুষ দৈনিক অন্তত ১০০ কোটি ঘণ্টা ভিডিও দেখে। তাই সহজ এবং কার্যকরী কন্টেন্ট মার্কেটিং করতে চাইলে ভিডিও কন্টেন্টের কোনো বিকল্প নেই। 

  • পডকাস্টিং(Podcasting)

বর্তমান সময়ে কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের আরেকটি উল্লেখযোগ্য মাধ্যম হলো পডকাস্টিং। এক্ষেত্রে আপনার ব্যবসা, পণ্য বা সেবার কথা গ্রাহককে জানানোর জন্য একটি স্পোকেন ওয়ার্ড ডিজিটাল অডিও ফাইল(Spoken Word Digital Audio File) তৈরি করা হয়৷ যেটা গ্রাহক ডাউনলোড করে বা অনলাইনে স্ট্রিম করে আপনার ব্যবসা এবং পণ্য সম্পর্কিত সকল তথ্য জানতে পারবে৷ যত বেশি এই কন্টেন্টটি প্রচার করতে পারবেন, তত বেশি মানুষ আপনার ব্যবসা, পণ্য, ব্র্যান্ড বা সেবার কথা জানবে। 

  • ইমেইল ট্যামপ্লেট(Email Template)

গ্রাহকের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ইমেইল ট্যামপ্লেট একটি কার্যকরী মাধ্যম। ইমেইল ট্যামপ্লেটের মাধ্যমে সংক্ষেপে গ্রাহকদেরকে নিজেদের পণ্য বা সেবার কথা জানানো হয় এবং তা নিতে উৎসাহিত করা যায়। 

  • ইনফোগ্রাফিক্স (Infographics)

ইনফোগ্রাফিক্স হলো এমন কিছু গ্রাফিক্স(Graphics) বা ইমেজেস(Images) যেখানে আলাদা করে কিছু টেক্সট(Text) যেমন জরুরি পরিসংখ্যান, চার্ট, গ্রাফ ইত্যাদি যোগ করে বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। ইনফোগ্রাফিক্সকে গ্রাফিকাল ভিজুয়াল রিপ্রেজেন্টেশনসও(Graphical Visual Representations) বলা হয় যেখানে তথ্য এবং উপাত্তগুলিকে সঠিক এবং স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হয়৷ যার কারণে মানুষ পণ্য এবং এর যাবতীয় তথ্য অল্প সময়ের ভিতরেই জেনে যেতে পারে। 

যদি ইনফোগ্রাফিক কন্টেন্টটি সঠিকভাবে তৈরি করা যায় এবং তা ঠিকমতো প্রচার করা হয়, তাহলে ইনফোগ্রাফিক্স কন্টেন্ট প্রচুর লাভজনক একটি মাধ্যম হতে পারে।

  • ই-বুকস(E-Books)

কন্টেন্ট মার্কেটিং এর আরেকটি মাধ্যম হলো ই-বুকস। এটি অনেকটা আর্টিকেল এবং ব্লগিং এর মতোই। মূলত এটি হচ্ছে একটি দীর্ঘায়িত টেক্সট যেখানে আপনি আপনার ব্যবসা, পণ্য এবং সেবা সম্পর্কে সবকিছু গ্রাহককে জানাতে পারবেন। অডিয়েন্সকে এটি ডাউনলোড করে নিতে হয়৷

কিছু ক্ষেত্রে এটি ব্লগিং এর চেয়েও কার্যকরী। যখন গ্রাহক ই-বুক ডাউনলোড করে, তখন গ্রাহককে আপনার প্রতিষ্ঠানকে কিছু তথ্য যেমন নাম, ইমেইল এড্রেস ইত্যাদি দিতে হয়। এতে করে পরবর্তীতেও আপনি যখন কোনো কন্টেন্ট তৈরি করবেন তখন সেটা সেই গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিতে পারবেন।

  • হোয়াইট পেপারস(White Papers)

হোয়াইট পেপার হচ্ছে মূলত একটি তথ্য ভিত্তিক কন্টেন্ট যেখানে কোনো নির্দিষ্ট সেবার সমাধান এবং উপাত্ত সরবরাহ করা হয়৷ হোয়াইট পেপার কন্টেন্ট সাধারণত একটু দীর্ঘ হয়ে থাকে, কারণ এখানে পণ্য সম্পর্কে সব রকম তথ্যের বিবরণ দেওয়া হয়৷ যদি আপনি এটি লেখার জন্য অন্য কাউকে নিয়োগ করে থাকেন, সেক্ষেত্রে আপনার অন্যান্য কন্টেন্ট মার্কেটিং কৌশলগুলোর তুলনায় একটু বেশি খরচ হবে। যদি হোয়াইট পেপার কন্টেন্টটি কয়েক পেজের চেয়ে বেশি হয়, সেক্ষেত্রে সেখানে অবশ্যই টেবল অফ কন্টেন্ট(Table Of Content) থাকতে হবে।

এগুলো ছাড়াও আরো বিভিন্ন রকম কন্টেন্ট মার্কেটিং কৌশল রয়েছে। যেমন :

  • স্লাইডশেয়ার প্রেজেন্টেশনস(Slideshare Presentations)
  • লিড ম্যাগনেটস(Lead Magnets)
  • ভিজুয়াল কন্টেন্ট ইত্যাদি।

কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের ব্যবহার

  • বিক্র‍য় বৃদ্ধি করতে

টিভিতে, রেডিওতে বিজ্ঞাপন দেওয়া, ব্যানার বা বিলবোর্ড লাগিয়ে মার্কেটিং করা এগুলো মার্কেটিংয়ের অনেক পুরাতন পদ্ধতি। মানুষ এখন এগুলো আর আগের মতো গুরুত্ব দেয় না। তাই মার্কেটারদেরকে নিজেদের পণ্যের বিজ্ঞাপন ও পণ্যের বিক্রয় বৃদ্ধি করতে নতুন নতুন মার্কেটিং কৌশল অবলম্বন করতে হয়৷ আর এই ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী সমাধান হচ্ছে কন্টেন্ট মার্কেটিং।

কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের অনেকগুলো মাধ্যম রয়েছে৷ আপনি যে পণ্যের মার্কেটিংয়ের জন্য যে মাধ্যমটা ব্যবহার করা প্রয়োজন মনে করেন সেটাই ব্যবহার করতে পারবেন। সঠিক মাধ্যম ব্যবহার করে যথাযথ উপায়ে মার্কেটিং করা গেলে তা গ্রাহকেরও পছন্দ হবে এবং পণ্যের বিক্রয়ও বাড়বে। 

  • ব্র্যান্ড তৈরি করতে

যখন কোনো প্রতিষ্ঠানের পণ্য মানুষের অনেক পছন্দ হয় এবং তার চাহিদা এবং বিক্রয় অনেক বেশি বেড়ে যায়, তখন সেই পণ্যটি একটি ব্র্যান্ডে পরিণত হয়৷ তখন দেখা যায় ঐ প্রতিষ্ঠানটিকে প্রতিষ্ঠানের নামের চেয়ে ব্র্যান্ডের নামেই বেশি চিনে থাকে। কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের যথাযথ ব্যবহার আপনার প্রতিষ্ঠানের পণ্যকে ব্র্যান্ড হিসেবে গড়ে তুলতে পারে।

এখন ব্র্যান্ড তখনই গড়ে উঠবে যখন মানুষ সেটার কথা জানবে এবং তাদের সেটা পছন্দ হবে। আর এজন্য দরকার উপযুক্ত মার্কেটিং। আপনি যে মাধ্যম বা মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে আকর্ষণীয় কন্টেন্ট তৈরি করতে পারবেন এবং তা যদি মানুষের পছন্দসই হয়, তাহলে মানুষ সেই পণ্যটির ব্যাপারেও উৎসাহিত হবে। আর যদি পণ্যটি মানুষের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হয়, তাহলে এক সময় সেটি ব্র্যান্ডে পরিণত হবে। 

  • গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে

বাস্তবতা হচ্ছে বিজ্ঞাপনের যে পুরাতন মাধ্যমগুলো রয়েছে সেগুলো মানুষ এখন আর পছন্দ করেনা। এগুলো পুরাতন হয়ে যাওয়ায় মানুষ এখন এই ধরনের বিজ্ঞাপন প্রক্রিয়া দেখতে দেখতে বিরক্ত৷ বিজ্ঞাপন চোখে পরলেও বেশিরভাগ সময়ই মানুষ তা এড়িয়ে যায়। তাই গ্রাহককে আপনার ব্যবসা, পণ্য বা সেবার প্রতি আকৃষ্ট করতে প্রচারণার নতুন পদ্ধতি উদ্ভব করতে হয়। বর্তমানে গ্রাহককে আপনার সেবার প্রতি আকৃষ্ট করার একটি ভালো উপায় হচ্ছে কন্টেন্ট মার্কেটিং৷ 

কন্টেন্ট মার্কেটিং এর গঠনটি এমন যে আপনি যদি নিজের সৃজনশীলতা, মেধা, বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে মার্কেটিং করতে পারেন, তাহলে তা অবশ্যই গ্রাহকের মনোযোগ আকর্ষণ করবে৷ যখন পণ্যের বিস্তারিত শোনার পাশাপাশি তা স্বচক্ষে দেখা, বিস্তারিত পড়া এরকম আকর্ষণীয় মার্কেটিং গ্রাহকের চোখে পরবে, স্বাভাবিকভাবেই তখন তারা সেটার প্রতি আকৃষ্ট হবে। এভাবেই গ্রাহকের সাথে প্রতিষ্ঠানটির একটা ভালো সম্পর্ক তৈরি হবে। 

  • গ্রাহকদের দীর্ঘমেয়াদি সেবা দিতে

একটা স্বাভাবিক বাস্তবতা হচ্ছে যে জিনিসটা আমাদের পছন্দ সেটা আমরা বারবার চাই। যখন গ্রাহক আপনার কন্টেন্ট মার্কেটিং দেখে আপনার পণ্যের প্র‍তি উৎসাহিত হয়ে তা ক্রয় করবে এবং পণ্যটি যদি তাদের পছন্দ হয়, তাহলে তারা পরবর্তীতেও ঐ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের পণ্য ক্রয় করতে আগ্রহী হবে। আর সঠিক মার্কেটিং এবং সুযোগ সুবিধা সমৃদ্ধ পণ্য তৈরি করা গেলে গ্রাহকের সেই পণ্যগুলোও পছন্দ হবে। এভাবে প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের একটা দীর্ঘমেয়াদি সেবা দেওয়ার সুযোগ পাবে।

  • খ্যাতি প্রতিষ্ঠা করতে

কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান তখনই খ্যাতি অর্জন করতে পারবে যখন সেটি তার সেবা দ্বারা মানুষের মন জয় করে নিতে পারবে। আর আপনার পণ্য মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য আপনাকে অবশ্যই সেটির মার্কেটিং করতে হবে। আর এই ক্ষেত্রে কন্টেন্ট মার্কেটিংই সবচেয়ে ভালো বিকল্প। কারণ কন্টেন্ট মার্কেটিং দ্বারা আপনি আপনার পণ্যের প্রচার সবচেয়ে সুন্দর এবং আকর্ষণীয় পদ্ধতিতে করতে পারবেন এবং একইসাথে অনেক বেশি মানুষের কাছে তা পৌঁছাতে পারবেন। আর যখনই আপনার মার্কেটিং এবং পণ্য মানুষের পছন্দের তালিকায় উপরের দিকে চলে আসবে, তখন আপনার প্রতিষ্ঠানটিও বিখ্যাত হয়ে যাবে। 

  • সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশনে(এসইও) সহায়তা করতে

এসইও হচ্ছে আপনার ওয়েবসাইটের কন্টেন্টকে সার্চ লিস্টের উপরের দিকে নিয়ে আসার একটি মাধ্যম। এর একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে কিওয়ার্ড রিসার্চ করা। আপনাকে এমন একটি কিওয়ার্ড খুঁজে বের করতে হবে যেটা ব্যবহার করে আপনার টার্গেট অডিয়েন্স সহজেই আপনার কন্টেন্টটি খুঁজে পাবে। কিওয়ার্ড বাছাই করা খুব জরুরি, কারণ আপনি যদি সঠিক কিওয়ার্ড বাছাই না করেন তাহলে দেখা যাবে আপনার প্রতিদ্বন্দ্বীদের কেউ ভালো কন্টেন্ট তৈরি না করেও তাদের কন্টেন্টটি সার্চ লিস্টে আপনার আগে দেখাচ্ছে। কারণ তারা উপযুক্ত কিওয়ার্ডটি বাছাই করেছে।

তাই আপনি যখন কোনো কন্টেন্ট তৈরি করবেন, তখন আপনাকে পুরো কন্টেন্টটি ভালো মতো যাচাই-বাছাই করে একটি উপযুক্ত কিওয়ার্ড ঠিক করতে হবে। আপনি যদি সঠিক কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ ইঞ্জিনকে সহায়তা করতে পারেন তাহলে সার্চ ইঞ্জিন আপনার কন্টেন্টটিকে সার্চ লিস্টের উপরের দিকে নিয়ে আসবে। এতে করে মানুষ কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করলেই আপনার কন্টেন্টটি খুঁজে পাবে। 

এগুলো ছাড়াও আরো বিভিন্ন ক্ষেত্রে কন্টেন্ট মার্কেটিং ব্যবহার করা হয়।

কন্টেন্ট মার্কেটিং কীভাবে শুরু করবেন?

কন্টেন্ট মার্কেটিং কী, কীভাবে কাজ করে, কোথায় কোথায় এর প্রয়োগ রয়েছে এগুলো আমরা জানলাম। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমরা যে কন্টেন্ট মার্কেটিং করবো, এটা শিখবো কীভাবে বা কীভাবে শুরু করবো। কন্টেন্ট মার্কেটিং শুরু করার জন্য আপনার কন্টেন্ট মার্কেটিং সম্পর্কে প্রয়োজনীয় ধারণা থাকতে হবে। আর এগুলো আপনি নিম্নোক্ত মাধ্যমে পেতে পারেন :

  • কন্টেন্ট মার্কেটিং টিউটোরিয়াল

কন্টেন্ট মার্কেটিং কীভাবে শুরু করবেন সে ব্যাপারে ধারণা পাওয়ার সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হচ্ছে টিউটোরিয়াল দেখা। আপনি ইউটিউব বা অন্য কোনো প্লাটফর্মে খুঁজলে এই সম্পর্কিত অনেকগুলো টিউটোরিয়াল পাবেন। টিউটোরিয়ালগুলোতে কন্টেন্ট মার্কেটিং কীভাবে শুরু করবেন, এই সম্পর্কিত সম্পূর্ণ গাইডলাইন দেওয়া রয়েছে। আপনি সেগুলো ভালো করে দেখলে সহজেই বুঝতে পারবেন আপনাকে কী করতে হবে আর কীভাবে করতে হবে। 

  • কন্টেন্ট মার্কেটিং কোর্স

কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের অনেকগুলো অনলাইন ও অফলাইন কোর্স রয়েছে। আপনি অনলাইনে একটু খোঁজ করলেই এই কোর্সগুলো পেয়ে যাবেন। আর অফলাইন কোর্সগুলোর জন্য আপনাকে আপনার আশেপাশে খোঁজ-খবর রাখতে হবে, যাতে যখনই কোর্স করার সুযোগ আসে আপনি যেনো সেটা লুফে নিতে পারেন।

কোর্সগুলো পেইড বা বিনামূল্যের এবং আনপেইড বা অর্থ দিয়ে দুইভাবেই করা যায়। আপনি আপনার সুবিধা অনুযায়ী যেটা ইচ্ছা সেটা করতে পারবেন। তবে ফ্রি কোর্সের চেয়ে পেইড কোর্সে আপনি তুলনামূলক ভালো মতো বিষয়টা আয়ত্ত করতে পারবেন। তাই আমাদের পরামর্শ থাকবে পেইড কোর্স করার।

  • কন্টেন্ট মার্কেটিং ব্লগিং

কন্টেন্ট মার্কেটিং শুরু করার জন্য আপনাকে সঠিক গাইডলাইন দিতে পারে কন্টেন্ট মার্কেটিং ব্লগিং৷ বিশ্বের বড় বড় কন্টেন্ট মার্কেটাররা প্রায়ই এটি নিয়ে ব্লগ লিখে থাকেন। তারা কীভাবে শুরু করছেন, কী কী ধাপ করে এই পর্যায়ে এসেছেন এই অভিজ্ঞতাগুলো তারা ব্লগে শেয়ার করে থাকেন। আপনি যদি তাদের ব্লগগুলো পড়েন তাহলে সেখান থেকে আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন কীভাবে আপনাকে কন্টেন্ট মার্কেটিং করতে হবে, কীভাবে শুরু করতে হবে। 

এগুলো ছাড়াও আরো অনেক মাধ্যমেই কন্টেন্ট মার্কেটিং শেখা যায়৷ তবে এগুলোই সবচেয়ে কার্যকরী। 

কন্টেন্ট মার্কেটিং করে কীভাবে আয় করা যায়?

কন্টেন্ট মার্কেটিং করে

কন্টেন্ট মার্কেটিং করে আয় করার বিভিন্ন রকম মাধ্যম রয়েছে। নিচে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো : 

এডভার্টাইসমেন্ট(Advertisement) বা বিজ্ঞাপন

কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের দ্বারা আয় করার একটি অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে এডভার্টাইসমেন্ট বা বিজ্ঞাপন৷ এই ডিজিটাল যুগে এডভার্টাইজিং থেকে টাকা আয় করার অনেকগুলো মাধ্যম রয়েছে। তন্মধ্যে জনপ্রিয় কয়েকটি হলো সার্চ এডস(Search Ads), ব্যানার(Banner), খুদে বার্তা বা টেক্সট লিংক(Text Link), ভিডিও, স্পনসরশিপ, সোশ্যাল মিডিয়া, মোবাইল টেক্সট(Mobile Text) ইত্যাদি৷ সাধারণত প্রিন্ট বা ব্রডকাস্টিংয়ের চেয়ে ডিজিটাল এডভার্টাইজিংয়ে খরচ কম হয়৷ 

এফিলিয়েট রেভেনিউ(Affiliate Revenue)

আপনি যখন আপনার সাইটে বা নিজস্ব কোনো অনলাইন প্লাটফর্মে কোনো রিটেইলার বা প্রতিষ্ঠানের পণ্যের প্রচারণা চালিয়ে তা মানুষের কাছে বিক্রি করবেন তখন প্রতিটি বিক্রয়ের জন্য আপনি তাদের থেকে কমিশন পাবেন। অর্থাৎ, এই ক্ষেত্রে মূলত আপনি রিসেলার হিসেবে কাজ করেন। তাছাড়া আপনি যদি তাদের সাইটে বা তাদের কাছে নতুন গ্রাহক আনতে পারেন তাহলে প্রতিটা গ্রাহকের জন্য আপনি আলাদা কমিশন পাবেন। 

সাবস্ক্রিপশনস(Subscriptions)

যখন কোনো গ্রাহক একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কোনো পণ্য বা সেবার এক্সেস বা নিয়ন্ত্রণ নিজের কাছে রাখতে চায়, তখন তাকে সেটার জন্য একটি সাবস্ক্রিপশন ফি দিতে হয়৷ যেমন ধরুন গ্রামারলি প্রিমিয়াম(Grammarly Premium)। গ্রামারলি ইয়ারলি, মান্থলি অনেক রকম সাবস্ক্রিপশন প্যাকেজ আছে। আর এর এক্সেস পাওয়ার জন্য আপনি মাসিক বা বাৎসরিক বা যে প্যাকেজই নেন না কেন সেটার ভিত্তিতে আপনার গ্রামারলিকে টাকা দিতে হবে। এভাবে সাবস্ক্রিপশন ফি এর মাধ্যমে টাকা আয় করা যায়। 

ইমেইল মার্কেটিং

কন্টেন্ট মার্কেটিং থেকে আয় করার আরেকটি উল্লেখযোগ্য মাধ্যম হচ্ছে ইমেইল মার্কেটিং। ইমেইল মার্কেটিং যথাযথভাবে করা গেলে আপনার কন্টেন্টটি অর্থ আয়ের একটি ভালো উৎস হতে পারে। আপনার ইমেইলটি যেনো স্পষ্ট ভাষায় লেখা হয় এবং সেখানে যেনো আপনার উদ্দেশ্যটি সঠিকভাবে বোঝানো হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। আপনি ইমেইলে পণ্যের বিজ্ঞাপন করুন, বা গ্রাহকের দ্বারা ফর্ম সাবমিশনের কাজ করাতে চান, মোট কথা যাই করুন না কেনো সেটা যেনো আপনার ইমেইলে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করা হয় সেটা আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে। 

এনসিলেরি প্রোডাক্টস(Ancillary Products)

আপনি যখন কোনো পণ্য বিক্রি করবেন, তখন এর সাথে সম্পর্কিত জিনিসগুলোকে বলা হয় এনসিলেরি প্রোডাক্টস। আপনি আপনার টার্গেট অডিয়েন্সের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য আনলে সেখান থেকেও আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। যেমন যেসব গ্রাহকের কম্পিউটারের চাহিদা রয়েছে, তাদের মাউস প্যাড(Mouse Pad) ও প্রয়োজন হয়। আপনি যদি কম্পিউটারের পাশাপাশি মাউস প্যাডও বিক্রি শুরু করেন, তাহলে সেখান থেকে আপনি অতিরিক্ত উপার্জন করতে পারবেন। 

কন্টেন্ট প্রোডাক্টস(Content Products)

কন্টেন্ট প্রোডাক্টস হচ্ছে কোনো পণ্যের সংক্ষিপ্ত বিবরণ, তথ্য, ছবি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস সমৃদ্ধ একটি কন্টেন্ট। যেমন আপনি একটি হেডফোন বিক্রি করতে চাচ্ছেন। এখন আপনি যদি সেটার প্রয়োজনীয় তথ্যাদি, বিবরণ, ছবি ইত্যাদি সমৃদ্ধ একটি কন্টেন্ট প্রোডাক্ট তৈরি করতে পারেন, তাহলে মানুষ সেটির প্রতি উৎসাহিত হবে কারণ এতো সংক্ষেপে কোনো পণ্যের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ধারণাটুকু পাওয়া যায় না। তাই এটি আপনার অর্থ উপার্জনের আরেকটি ভালো মাধ্যম হতে পারে। 

এগুলো ছাড়াও আরো অনেকভাবেই কন্টেন্ট মার্কেটিং থেকে আয় করা যায়।

শেষ কথা

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের অন্যান্য কৌশলগুলোর তুলনায় বর্তমানে কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের চাহিদা এবং কার্যকারীতা দুটোই অনেক বেশি৷ তাই আপনি যদি কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে থাকেন এবং কন্টেন্ট মার্কেটিং ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাহলে নিশ্চিন্তেই শুরু করতে পারেন। আশা করা যায়, আপনার কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ে ভালো একটি ক্যারিয়ার গড়ে উঠবে। 

তৌহিদ

ABOUT TOUHID

3 thoughts on “কন্টেন্ট মার্কেটিং কী? কন্টেন্ট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবেন?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *