Saturday, July 27, 2024
গাইডব্লগ

এফিলিয়েট মার্কেটিং কী? এফিলিয়েট মার্কেটিং কীভাবে শিখবো?

এফিলিয়েট মার্কেটিং কী আপনার মনে যদি এমন প্রশ্ন আসে তবে আপনি আজকে সঠিক জায়গায় এসেছেন আমরা আজকে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। বর্তমান যুগে আপনি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা থেকে বড় কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মালিক যেটাই হয়ে থাকেন না কেন, আপনার ব্যবসার উন্নতিতে আপনাকে অবশ্যই ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সাহায্য নিতে হবে। ডিজিটাল মার্কেটিং অনেকsudadera cobra kai sobrecostilla al horno weihnachtskleidung für babys batterie voiture smart fortwo otto damen unterhosen baumwolle pochette mila and stories bikinis easy wear el corte ingles billi bi bottines stick zone sensibili spf 50 amazon montre connectée homme garmin fenix 6 gomme 4 stagioni ogni quanto cambiarle aspiradora irobot roomba 960 il decespugliatore piu potente amazon caisson metallique occasion texte correcteur বিস্তৃত একটি ক্ষেত্র। এটি অনলাইন ও অফলাইন দুইভাবেই করা যায়। আর অনলাইন ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের একটি ক্ষেত্র হলো এফিলিয়েট মার্কেটিং।

বর্তমান বাজার বা মার্কেটপ্লেসে অন্যান্য ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশলগুলোর মতো এফিলিয়েট মার্কেটিং এর চাহিদাও অনেক বেড়ে গেছে। অসংখ্য মার্কেটার এবং মার্কেটপ্লেসে আসতে ইচ্ছুক এমন অনেকেই এই মার্কেটিং প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে জানতে চান। আজকের লেখাটিতে আমরা এটি নিয়েই বিস্তারিত জানাতে চেষ্টা করবো।

অবশ্যই পড়বেন

গ্রাফিক্স ডিজাইন কী

টি-শার্ট ডিজাইন কী

লোগো ডিজাইন কী

মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট কী

এফিলিয়েট মার্কেটিং কাকে বলে?

আপনি যদি এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে প্রথমেই আপনাকে বুঝতে হবে বিষয়টা আসলে কী। যখন কোনো মার্কেটার কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে গ্রাহকদের কাছে তাদের পণ্যের প্রচার-প্রচারণা চালায়, তখন এই মার্কেটিং কৌশলটিকে বলা হয় এফিলিয়েট মার্কেটিং।

অর্থাৎ এই ক্ষেত্রে আপনি সরাসরি কোনো প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত থাকেন না, পরোক্ষভাবে কাজ করেন। বিনিময়ে প্রতিষ্ঠানটি আপনাকে আপনি যে পণ্যের প্রচারণা চালিয়েছেন তার মূল্যের উপর শতাংশ হারে কিছু কমিশন দিবে। সাধারণত প্রতিষ্ঠানগুলো ২% – ৭০% অব্দি কমিশন দিয়ে থাকে। একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টা আরো ভালো মতো বোঝা যাবে।

এফিলিয়েট মার্কেটিং কাকে বলে

ধরুন, আপনি কোনো এফিলিয়েট মার্কেটিং ওয়েবসাইটে(যেমন Amazon.com) একটি একাউন্ট খুললেন। একাউন্ট খোলার পর আপনি গ্রাহকদের কাছে তাদের কোনো পণ্যের প্রচারণা করেছেন। ধরা যাক, পণ্যটির মূল্য ৬০০০০ টাকা। এখন প্রতিষ্ঠানটি আপনাকে এই মূল্যের উপর ১০% হারে কমিশন দিবে। তাহলে এই মার্কেটিং থেকে আপনার আয় হবে ৬০০০০ × ১০% = ৬০০ টাকা। এই ৬০০ টাকা আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করেছেন।

এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের প্রকারভেদ

এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের প্রকারভেদ

আমরা ইতিমধ্যেই এফিলিয়েট মার্কেটিং কী তা জানতে পেরেছি। আসলে এফিলিয়েট মার্কেটিং ছোট-খাটো কোনো ক্ষেত্র নয়, বরং এর পরিধি অনেক বিস্তৃত। এজন্য এটিকে কয়েকটি ধাপে ভাগ করা হয়েছে৷ নিচে আমরা সেগুলো নিয়ে আলোচনা করবো :

একজন মার্কেটার কীসের ভিত্তিতে কমিশন পাবেন সেটার উপর নির্ভর করে এফিলিয়েট মার্কেটিংকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা :

  • রেভিনিউ শেয়ারিং (Revenue Sharing)/ পে পার সেল (Pay Per Sale)
  • কস্ট পার অ্যাকশন (Cost Per Action)

রেভিনিউ শেয়ারিং/ পে পার সেল

এই প্রক্রিয়াটিতে কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্যের এফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে বিক্রয়ের মাধ্যমে যে অর্থ উপার্জন করেছে, তার একটি অংশ সে এফিলিয়েট মার্কেটারের সাথে ভাগাভাগি করে, এজন্যই একে বলা হয় রেভিনিউ শেয়ারিং বা পে পার সেল।

যেমন ধরেন, কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের একটি পণ্যের দাম ২০০০ টাকা। এখন একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার পণ্যটির প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে বেশ কিছু পণ্য বিক্রয়ে সহায়তা করলো। তাহলে প্রতিষ্ঠানটি ওই মার্কেটারকে প্রতিটা পণ্যের জন্য ৪০০/৫০০ টাকা এরকম একটা অর্থ আপনাকে দিয়ে দিবে। এটাই হলো রেভিনিউ শেয়ারিং।

কস্ট পার অ্যাকশন

এই ক্ষেত্রে এফিলিয়েট মার্কেটারের সাথে কোনো রেভিনিউ শেয়ারিং বা অর্থ ভাগাভাগি করা হয় না, বরং প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায়ীর দিয়ে দেওয়া কর্মপ্রক্রিয়ার ভিত্তি করে মার্কেটারকে কমিশন বা অর্থ দেওয়া হয়।

যেমন : কোনো প্রতিষ্ঠান সুপারিশ করলো যে যারা এই কাজটি করতে পারবে তাদেরকে একটি নির্দিষ্ট কমিশন বা অর্থ দেওয়া হবে। আজকাল অনেকেই এই মার্কেটিং প্রক্রিয়াটির প্রতি আগ্রহী হচ্ছে, কারণ এই ক্ষেত্রে আপনাকে সরাসরি কোনো পণ্য বিক্রয় করতে হয় না। বরং কোনো একটি বিশেষ কাজ যেমন পণ্যটির জন্য বিজ্ঞাপন তৈরি, শুধুমাত্র এটি করেই আপনি কমিশন বা অর্থ পেতে পারেন। তবে রেভিনিউ শেয়ারিং মার্কেটিং এর তুলনায় এক্ষেত্রে উপার্জন কিছুটা কম হয়।

আবার এফিলিয়েট মার্কেটারকে কতবার কমিশন দেওয়া হবে সেটার উপর ভিত্তি করে এফিলিয়েট মার্কেটিংকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা :

  • সিঙ্গেল টায়ার ( Single Tier)
  • টু টায়ার (Two Tier) / মাল্টি টায়ার (Multi Tier)

মূলত এগুলোয় এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের প্রকারভেদ।

সিঙ্গেল টায়ার (Single Tier)

এই মার্কেটিং কৌশলে প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায়ী আপনাকে প্রত্যেকটা পণ্য বিক্রয়ের জন্য কেবলমাত্র একবারই অর্থ দিবে। যেমন অ্যামাজন(Amazon) আপনাকে প্রত্যেটা পণ্য বিক্রয়ের জন্য ১৫ ডলার করে দিবে, এটাই সিঙ্গেল টায়ার মার্কেটিং।

টু টায়ার (Two Tier) / মাল্টি টায়ার (Multi Tier)

এই মার্কেটিং আপনি নিজের বিক্রি করা পণ্য ছাড়াও আপনার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হওয়া মানুষদের প্রত্যেকটা বিক্রি থেকেও কমিশন বা অর্থ পাবেন। যেমন : আপনার মাধ্যমে দুইজন মানুষ প্রতিষ্ঠানটির সাথে যুক্ত হয়েছে, সেক্ষেত্রে তাদের প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে বিক্রি হওয়া প্রত্যকটি পণ্য থেকে আপনিও কমিশন পাবেন। এটাই টু টায়ার (Two Tier) বা মাল্টি টায়ার (Multi Tier) মার্কেটিং।

এফিলিয়েট মার্কেটিং কেন করবো?

ডিজিটাল মার্কেটিং তো অনেকভাবেই করা যায়। সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, কন্টেন্ট মার্কেটিং, ইমেইল মার্কেটিং, এরকম আরো কতভাবেই করা যায়।

এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে যে এতো গুলো বিকল্প থাকতে আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিংই কেন করবেন? এই মার্কেটিং কৌশলটি বেছে নেওয়ার জন্য অনেকগুলো উল্লেখযোগ্য কারণ রয়েছে। তন্মধ্যে কিছু নিম্নে তুলে ধরা হলো :

  • এই মার্কেটিংয়ে আপনি একইসাথে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হয়ে কাজ করতে পারবেন।
  • আপনাকে খুব অল্প বিনিয়োগ করতে হবে।
  • এই ক্ষেত্রে আপনার নিজস্ব কোনো প্রতিষ্ঠান বা পণ্য থাকার প্রয়োজন নেই।
  • পূর্ণ স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করতে পারবেন।
  • আপনি নিজে আপনার পছন্দমতো পণ্য নির্বাচন করে সেটার প্রচারণা চালাতে পারবেন।
  • আপনি ঘরে বসে বা যেকোনো অবস্থানে থেকেই পণ্যের প্রচারণা চালাতে পারবেন।
  • এই মার্কেটিংয়ের আরেকটি বড় সুবিধা হলো এখানে আপনাকে কোনো ডেডলাইন বা সময় ধরে কাজ করতে হয় না।

এফিলিয়েট মার্কেটিং কেন করবো

এফিলিয়েট মার্কেটিং এরকম আরো অসংখ্য সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে। এজন্যেই মানুষ মূলত এটার ব্যাপার এতোটা আগ্রহী হচ্ছে।

এফিলিয়েট মার্কেটিং কীভাবে শুরু করবো?

এফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে কী কী সুযোগ সুবিধা পাবো তা তো আমরা জানতে পারলাম। আমরা বুঝতে পেরেছি যে, এই মার্কেটিং প্রক্রিয়াটিতে আমরা কোনো রকম বিনিয়োগ বা খরচ ছাড়াই, শুধুমাত্র প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। তাই বর্তমানে অনেকেই নিজেকে একজন এফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। কিন্তু তাদের মধ্যে এমনও কেউ কেউ আছেন যারা জানেন না কীভাবে এটি শুরু করতে হয়।

এফিলিয়েট মার্কেটিং কীভাবে শুরু করবো

এই মার্কেটিং কৌশলটি শিখতে চাইলে আপনাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে হবে। যেমন এটি কীভাবে কাজ করে, কোথায় আপনি পণ্যের প্রচারণা চালাবেন ইত্যাদি ইত্যাদি৷ আমরা চেষ্টা করবো এই ব্যাপারে কিছুটা ধারণা দিতে।

  • প্রথমেই আপনাকে ঠিক করে নিতে হবে আপনি কোন পণ্যটি নিয়ে কাজ করবেন। এক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয় বিবেচনায় আসবে। যেমন আপনার নিজস্ব পছন্দ, পণ্যটির চাহিদা কেমন ইত্যাদি। ধরুন আপনি এমন একটি পণ্য বেছে নিলেন যার বর্তমান বাজার বা মার্কেটপ্লেসে খুব বেশি চাহিদা নেই। সেক্ষেত্রে আপনি সেখান থেকে খুব বেশি লাভ পাবেন না। কিন্তু আপনি যদি এমন একটি পণ্য নির্বাচন করেন যা গ্রাহকের পছন্দের এবং যার চাহিদা অনেক বেশি, তাহলে সেখান থেকে আপনি যথেষ্ট অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। বিশেষ করে পণ্যের দাম যদি বেশি হয় সেক্ষেত্রে আপনি কমিশনও বেশি পাবেন। এই সকল কিছু মাথায় রেখেই আপনাকে পণ্য নির্বাচন করতে হবে।
  • পণ্য নির্বাচনের পর আপনি মার্কেটিংয়ের জন্য একটি অনলাইন প্লাটফর্ম তৈরি করুন৷ সেটা যেকোনো রকম অনলাইন প্লাটফর্মই হতে পারে, তবে সেটাতে দর্শকের উপস্তিতি যেন ভালো থাকে। সবচেয়ে ভালো হয় নিজের ওয়েবসাইট খুলে ফেললে। তাছাড়াও আপনি ইউটিউব, সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকেও প্লাটফর্ম হিসেবে বেছে নিতে পারেন।
  • অনলাইন প্লাটফর্ম তৈরি করা হয়ে গেলে আপনি যে ওয়েবসাইটের সাথে কাজ করতে চান সেখানে এফিলিয়েট প্রোগ্রামের মাধ্যমে একটি একাউন্ট খুলে ফেলুন। তারা আপনার থেকে কিছু তথ্য চাইবে। সেগুলো দিলেই আপনার একাউন্ট তৈরি হয়ে যাবে। এরপর আপনি যে পণ্যগুলো নির্বাচন করেছেন ওয়েবসাইট থেকে সেগুলোর লিংক সংগ্রহ করুন। ওয়েবসাইটে বিভিন্ন পণ্যের লিংক বিভিন্নভাবে দেওয়া থাকে। যেমন : ডোমেইন ও হোস্টিং প্রতিষ্ঠান গুলোর ক্ষেত্রে সাধারণত একটি লিংক দিয়েই কাজ হয়ে যায়। কিন্তু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে আপনাকে প্রত্যেকটি পণ্যের জন্য আলাদা আলাদা লিংক নিতে হবে। অতঃপর সেগুলো নিয়ে আপনার প্লাটফর্মে প্রচারণা চালাতে থাকুন।
  • এরপরের ধাপটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আপনার ওয়েবসাইট বা অন্য যে প্লাটফর্মই আপনি ব্যবহার করে থাকেন না কেন সেটা এসইও ফ্রেন্ডলি বা সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজড করে ফেলতে হবে৷ আপনি যদি আপনার প্লাটফর্মটি এসিইও ফ্রেন্ডলি করে ফেলতে পারেন, তাহলে সার্চ ইঞ্জিন ( যেমন : ইয়াহু, বিং, গুগল ইত্যাদি) আপনার প্লাটফর্মের কন্টেন্টগুলোকে সার্চ লিস্টের উপরের দিকে দেখাবে। এতে আপনার কোনো খরচ হবে না। অবশ্য আপনি যদি সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং বা পেইড মার্কেটিং করে থাকেন, তাহলে এসইও করার দরকার হবে না।
  • আপনি যে প্লাটফর্মের মাধ্যমে মার্কেটিং করতে চান সেখানে আপনার প্রচারণামূলক প্রতিটি কন্টেন্টের নিচে পণ্যগুলোর এফিলিয়েট লিংক দিয়ে দিবেন। তবে এক্ষেত্রে একটা সমস্যা হচ্ছে পণ্যের এফিলিয়েট লিংক সাধারণত অনেক বড় হয়। সেক্ষেত্রে আপনাকে বিভিন্ন রকম ইউআরএল শর্টেনারের (URL Shortener) মাধ্যমে লিংকগুলো ছোট করে নিতে হবে।

এখন আপনি ভাবতে পারেন যে এফিলিয়েট মার্কেটিং যে করবো সেটা কীভাবে শিখবো? নিচে আমরা এই ব্যাপারে সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করছি।

  • এফিলিয়েট মার্কেটিং টিউটোরিয়াল

সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এফিলিয়েট মার্কেটিং শেখার সবচেয়ে সহজ এবং কার্যকরী উপায় হচ্ছে ইউটিউবে(YouTube) ভিডিও টিউটোরিয়াল থেকে। এই মার্কেটপ্লেসে ভালো অবস্থানে আছেন এমন অনেকেই যারা এই মার্কেটিং কৌশলটি শিখতে চায়, তাদেরকে টিউটোরিয়াল দেখে শেখার পরামর্শ দেন। ইউটিউবে এফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়ে অনেকগুলো উল্লেখযোগ্য টিউটোরিয়াল আছে। আপনি সেখান থেকে আপনার পছন্দ অনুসারে কয়েকটা বা যেকোনো একটা টিউটোরিয়াল দেখে শিখে নিতে পারেন।

টিউটোরিয়াল দেখে শেখার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এক্ষেত্রে আপনি কিছু না বুঝলে তা বারবার দেখার সুযোগ পাবেন। ধরুন, অকস্মাৎ কিছু আপনি মনে করতে পারছেন না। সেক্ষেত্রে আরেকবার টিউটোরিয়ালটি দেখে নিলে তা আপনার সহজেই মনে চলে আসবে। তাছাড়া এখানে কোনো সময়ের ব্যাপার নেই, আপনি আপনার সুবিধা মতো যেকোনো সময়ই টিউটোরিয়ালগুলো দেখতে পারেন। আর টিউটোরিয়াল এতো বেশি পরিমাণে আছে যে কোনো একটা বা কয়েকটা দেখে আপনি না বুঝলেও আপনার মন মতো একটা বা কয়েকটা টিউটোরিয়াল পেয়েই যাবেন।

আপনি যতগুলো টিউটোরিয়াল দেখেন, যতবার দেখেন সেগুলোর জন্য আপনাকে কোনো খরচই করতে হবে না, সম্পূর্ণ বিনামূল্যেই আপনি এই সেবাটি পাবেন।

  • এফিলিয়েট মার্কেটিং কোর্স

জনপ্রিয় এই মার্কেটিং কৌশলটি শেখার আরেকটি ভালো উপায় হচ্ছে এফিলিয়েট মার্কেটিং কোর্স করা। সেটা অফলাইন বা অনলাইন দুইভাবেই করা যায়। আপনি আপনার সুবিধা মতো যেকোনোটা বেছে নিতে পারবেন।

সাধারণত এই কোর্সগুলো পেইড বা অর্থের বিনিময়ে অথবা ফ্রি বা বিনামূল্যেও করার সুযোগ থাকে। তার জন্য আপনাকে নিজ থেকে খোঁজ-খবর রাখতে হবে কখন, কোথায় বিনামূল্যে কোর্স করানো হচ্ছে। আর যদি পেইড কোর্স করতে চান, তাহলেতো যেকোনো সময়ই করতে পারছেন।

আপনি অনলাইনে কোর্সটি করতে চাইলে গুগলে একটু খুঁজলেই অনেকগুলো কোর্স পাবেন। তাছাড়া অনেকগুলো ই-লার্নিং প্লাটফর্মেই এই বিষয়ক অনেকগুলো কোর্স পাবেন। যেমন :

  • কোর্সেরা (Coursera)
  • ইউডেমি (Udemy)
  • রিলায়েবল সফট (Reliable Soft)
  • বহুব্রীহি (Bohubrihi)
  • লার্নিং বাংলাদেশ (Learning Bangladesh)

তবে ফ্রিতে শিখতে চাইলে আমার দেখা ভালো একজন মেন্টর লাজুক হাসান তার ওয়েবসাইটে এ ফ্রিতেই এফিলিয়েট মার্কেটিং এর উপর সুন্দর একটা কোর্স দিয়ে রেখেছে চাইলে দেখে নিতে পারেন।

এই বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় ই-লার্নিং প্লাটফর্মগুলো প্রায়ই ফ্রি কোর্স করার সুযোগ দেয়। আপনি প্লাটফর্মগুলোতে একটু চোখ রাখলেই মানসম্মত এই কোর্সগুলো সম্পূর্ণ বিনামূল্যেই করতে পারবেন। তাছাড়া অফলাইন বা সরাসরিও আজকাল অনেক জায়গাতেই এফিলিয়েট মার্কেটিং কোর্স করানো হয়। আপনি চাইলে সেখানে ভর্তি হয়েই এই মার্কেটিং কৌশলটি শিখতে পারেন।

আপনার যখন একটি এফিলিয়েট মার্কেটিং কোর্স করা থাকবে, তখন সেটি আপনাকে পরবর্তীতে চাকুরির ক্ষেত্রে সাহায্য করবে। যেকোনো প্রতিষ্ঠানই চায় নূন্যতম ধারণা আছে এমন কাউকে নিয়োগ দিতে। আপনার যখন এই বিষয়ক একটি কোর্স করা থাকবে, তখন সেটি আপনার জন্য বাড়তি সুবিধা হিসেবে কাজ করবে, কারণ প্রতিষ্ঠানটিও বুঝবে যে এই মার্কেটিং প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে আপনার নূন্যতম ধারণাটুকু আছে।

তাই এফিলিয়েট মার্কেটিং শেখার এটি আরেকটি উল্লেখযোগ্য মাধ্যম ।

  • এফিলিয়েট মার্কেটিং ব্লগ

সহজে এফিলিয়েট মার্কেটিং শেখার আরেকটি ভালো উপায় হচ্ছে ব্লগপোস্ট পড়া। এই মার্কেটিং কৌশল নিয়ে অসংখ্য মার্কেটাররা ব্লগিং করেছেন৷ বিশ্বের বড় বড় এফিলিয়েট মার্কেটারদের অনেকেই প্রতিনিয়ত এই মার্কেটিং কৌশলটি সম্পর্কে ব্লগিং করছেন। তাদের লেখাগুলো পড়লে আপনি বুঝতে পারবেন আপনাকে কী করতে হবে, কীভাবে করতে হবে।

বিশেষ করে নতুনদের জন্য কিছু বিশেষ ব্লগ লেখা হয় যাতে তারা সহজেই বুঝতে পারে কীভাবে তারা এই মার্কেটিংটি শিখবে, কীভাবে মার্কেটপ্লেসে আসবে। তাছাড়া মার্কেটপ্লেসের বর্তমান অবস্থান কেমন, ভবিষ্যতে কী হতে পারে, এখানে কেমন ক্যারিয়ার হতে পারে সবকিছুই আপনি এখান থেকে জানতে পারবেন।

বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষাতেই এফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়ে ব্লগ রয়েছে৷ আপনি আপনার সুবিধা মতো যেকোনোটা বেছে নিতে পারেন। তবে বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি ব্লগপোস্ট গুলাও পড়ার চেষ্টা করবেন। তাহলে আপনি গোটা বিশ্বের এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের অবস্থা, ধরণ সবকিছু সম্পর্কেই জানতে পারবেন।

এই বহুল প্রচলিত মার্কেটিং কৌশলটি নিয়ে বেশ কিছু ব্লগ রয়েছে৷ তন্মধ্যে জনপ্রিয় কয়েকটি হলো :

  • নীল প্যাটেল (Neil Patel)
  • স্মার্ট ব্লগার (Smart Blogger)
  • জেফ বুলাস (Jeff Bullas)
  • কন্টেন্ট মার্কেটিং ইন্সটিটিউট (Content Marketing Institute)
  • সার্চ ইঞ্জিন জার্নাল (Search Engine Journal
  • ব্যাকলিঙ্কো (Backlinko)
  • ইয়োস্ট ব্লগ (Yoast Blog)
  • মোজ ব্লগ (Moz Blog)

এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে How to Start Affiliate Marketing Step By Step এই আর্টিকেল পড়তে পারেন

এফিলিয়েট মার্কেটিং সাইট

এফিলিয়েট মার্কেটিং সাইট

বর্তমান পৃথিবীতে অনেকগুলো জনপ্রিয় এফিলিয়েট মার্কেটিং সাইট রয়েছে। সেগুলো থেকে খুব সহজেই আপনি মার্কেটিং করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

এফিলিয়েট মার্কেটিং সাইটগুলোতে মূলত দুই রকম পণ্যের মার্কেটিং করা হয়। সেগুলো হলো :

  • ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট বা পণ্য
  • ডিজিটাল প্রোডাক্ট বা পণ্য

ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট সাইট

ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট বলতে টেলিভিশন, কম্পিউটার, মোবাইল, পাঞ্জাবি, শাড়ি অর্থাৎ যে পণ্যগুলো হাতে ধরা বা ছোঁয়া যায় সেগুলোকে বোঝায়। এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের অনেকগুলো উল্লেখযোগ্য ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট সাইট রয়েছে। যেমন :

  • আমাজন এফিলিয়েট মার্কেটিং-Amazon Affiliate Marketing

বিশ্বের জনপ্রিয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো আমাজন। আমাজন অনেক পুরাতন একটি প্রতিষ্ঠান যা দীর্ঘদিন ধরে এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের সাথে যুক্ত আছে। আমাজনের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এখানে আপনি প্রায় সবরকম পণ্যই পাবেন। তাই আপনি নিজ পছন্দে পণ্য বাছাই করে মার্কেটিং করতে পারবেন।

আমাজন এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের সাথে যুক্ত হতে হলে আমাজন অ্যাসোসিয়েটস ( Amazon Associates) এ প্রবেশ করে নিচের তথ্যগুলি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে –

নাম (Name)

ঠিকানা (Address)

ইমেইল আইডি (Email ID)

মোবাইল নং (Mobile No.)

প্যান কার্ড (PAN Card)

ওয়েবসাইট/ব্লগ ইউআরএল (Website/Blog URL) অথবা সোশ্যাল মিডিয়া ইউআরএল (Social Media URL)

পারিশ্রমিক (Payment)

তথ্যগুলি দেওয়ার পরই আপনার আমাজন অ্যাসোসিয়েটসে অ্যাকাউন্ট খুলে যাবে এবং আপনার রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হবে। তারপর সেখান থেকে আপনি আপনার পছন্দমতো পণ্যের অ্যাফিলিয়েট লিংক নিয়ে আপনার নিজস্ব প্লাটফর্মে সেটির মার্কেটিং করতে পারবেন। প্রতিটি পণ্যের জন্য আপনি আমাজন থেকে আলাদা আলাদা কমিশন বা অর্থ পাবেন।

এখন আপনি ভাবতে পারেন যে একটি বিদেশ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান থেকে কোন মাধ্যম ব্যবহার করে আপনি টাকা নিতে পারবেন। এরও খুব সহজ একটি সমাধান আছে। আপনাকে পেওনিয়ারে একটি একাউন্ট খুলতে হবে। এরপর আমাজন আপনাকে খুব সহজেই পেওনিয়ারের মাধ্যমে আপনার ব্যাংক একাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দিবে। আর আপনার প্রাপ্য পারিশ্রমিক আপনি খুবই স্বল্প সময়ের মধ্যে পেয়ে যাবেন।

আমাজনের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলে এই প্লাটফর্মটির সবগুলো পণ্যই যথেষ্ট মানসম্মত। কোনো গ্রাহক যখন কোনো ই-কমার্স সাইট থেকে পণ্য কিনতে চান, তখন তার সর্বপ্রথম আমাজনের কথাই মাথায় আসে। তাই আমাজনের সাথে যুক্ত হলে আপনি প্রচুর গ্রাহক পাবেন এবং এতে করে আপনার উপার্জনও বাড়বে।

  • আলী এক্সপ্রেস-Ali Express

বিশ্বস্ততার দিক দিয়ে গোটা বিশ্বজুড়ে খ্যাতিসম্পন্ন একটি ই-কমার্স সাইট হলো আলী এক্সপ্রেস। আমাজনের মতো এখানেও আপনি প্রায় সকল প্রকারের পণ্যই পাবেন। তাদের একটি অন্যতম ভালো দিক হলো বিশ্বের যেকোনো জায়গা থেকেই আপনি তাদের পণ্যের মার্কেটিং করতে পারবেন এবং পণ্য বিক্রি হয়ে গেলে তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যেই তা গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেয়। এবং এই কাজের জন্য তারা আপনাকে ভালো মানেরই কমিশন দিবে।

আপনি যদি অন্য সাইটগুলোর নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে সন্দিহান থাকেন সেক্ষেত্রে আপনি বিনা দ্বিধায় আলী এক্সপ্রেসের সাথে যুক্ত হতে পারেন। আপনি নিজেই মানুষের রিভিউ দেখে বা যারা তাদের পণ্য কিনেছে তাদের সাথে সরাসরি কথা বলে তা বুঝতে পারবেন।

  • ইবেয়-eBay

বিশ্বের অন্যতম আরেকটি জনপ্রিয় নামকরা ই-কমার্স সাইট হলো ইবেয়। ইবেয়তেও প্রায় সব রকম পণ্যই পাওয়া যায় এবং পণ্যগুলো পুরোপুরি আন্তজার্তিক মানের। আপনি খুব সহজেই তাদের সাথে যুক্ত হয়ে তাদের পণ্যের প্রচারণা চালাতে পারেন।

ইবেয়ের পণ্যের মার্কেটিং করার সুবিধা হলো তাদের সব পণ্য মানসম্মত হওয়ায় সেগুলোর প্রচুর চাহিদা থাকে। তাই মানুষও তাদের পণ্যের প্রতি আগ্রহবোধ করে। আর আপনি যদি আপনার মার্কেটিং ভালো মতো করতে পারেন এবং আপনার প্লাটফর্মে কন্টেন্টের নিচে তাদের পণ্যটির এফিলিয়েট লিংক দিয়ে দেন, তাহলে পণ্যটি বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকবে। আর যত বেশি বিক্রি হবে, তত বেশি আপনি তাদের থেকে কমিশন পাবেন।

  • ফ্লিপকার্ট এফিলিয়েট প্রোগ্রাম-Flipkart Affiliate Program

বিশব্যাপী জনপ্রিয় আরেকটি এফিলিয়েট মার্কেটিং প্লাটফর্ম হলো ফ্লিপকার্ট এফিলিয়েট প্রোগ্রাম। এটি ভারতের একটি বহুল জনপ্রিয় অনলাইন কেনাকাটার ওয়েবসাইট। ফ্লিপকার্টের সাথে যুক্ত হতে আপনার কোনো অর্থ খরচ করতে হবে না। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে আপনি তাদের সাথে সংযুক্ত হয়ে তাদের পণ্যের মার্কেটিং করতে পারবেন।

ফ্লিপকার্টে অনেক রকম পণ্য রয়েছে। ক্যাটাগরি অনুযায়ী পণ্যের দাম বেশ কম রয়েছে। আপনার সুবিধা মতো যেটা আপনার পছন্দ সেটা নির্বাচন করতে পারবেন। অতঃপর সেটার মার্কেটিং করে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন কর‍তে পারবেন।

এর বাইরেও আরো অনেক রকম ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট সাইট রয়েছে। তার মধ্যে এগুলোয় বহুল প্রচলিত।

ডিজিটাল প্রোডাক্ট সাইট

ডিজিটাল প্রোডাক্ট হলো সফটওয়্যার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত প্রোডাক্ট যেগুলোর বাস্তবে কোনো অস্তিত্ব নেই, যেগুলো ধরা বা ছোঁয়া যায় না, যেমন : ই-বুক, ডোমেইন হোস্টিং ইত্যাদি। ফিজিক্যাল প্রোডাক্টের মতো অনকগুলো জনপ্রিয় ডিজিটাল প্রোডাক্ট সাইট রয়েছে, যেমন :

  • ইমপ্যাক্ট রেডিয়াস-Impact Radius

এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের ডিজিটাল প্রোডাক্ট সাইটগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ইমপ্যাক্ট রেডিয়াস। তাদের কাছে অনেক রকমের পণ্য রয়েছে। আপনি তাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে সেগুলো দেখতে পারেন। আর যদি পণ্যগুলো আপনার পছন্দের সাথে মিলে যায় এবং সেগুলোর যদি ভালো চাহিদা থাকে তাহলে আপনি সেই প্লাটফর্মটির সাথে যুক্ত হয়ে তাদের হয়ে মার্কেটিং শুরু করে দিন। মাস শেষে দেখবেন আপনি প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারছেন, কারণ তাদের পণ্যগুলো যথেষ্ট গুণসম্পন্ন এবং ভালো মানের। তাই সেগুলোর যথেষ্ট চাহিদা থাকে আর সেগুলো প্রচুর বিক্রিও হয়।

  • জেভিযো-Jvzoo

এফিলিয়েট প্রোগ্রামের মাধ্যমে ডিজিটাল প্রোডাক্টের মার্কেটিং করার আরেকটি ভালো প্লাটফর্ম হলো জেভিযো। ডিজিটাল প্রোডাক্ট বিক্রির ক্ষেত্রে গোটা বিশ্বজুড়ে এটি সুখ্যাতি অর্জন করেছে। তাই আপনার যদি এই ব্যাপারে আগ্রহ থাকে তাহলে আপনি নিশ্চিন্তে তাদের সাথে যুক্ত হতে পারেন।

বর্তমানে বিশ্বে ডিজিটাল প্রোডাক্টের চাহিদা অনেক বেশি। বিশেষ করে কিছু কিছু মানুষের প্রতিনিয়তই এগুলো দরকার হয়। তাই আপনি যদি তাদের কাছে পণ্য বিক্রি করতে পারেন তাহলে জেভিযো আপনাকে ভালো মানের কমিশন দিবে। আপনার উপার্জিত অর্থ আপনাকে তারা পেওনিয়ারের মাধ্যমে আপনার ব্যাংক একাউন্টে পাঠিয়ে দিবে।

এর বাইরেও আরো বেশ কিছু জনপ্রিয় ডিজিটাল প্রোডাক্ট সাইট রয়েছে। যেমন :

  • এনভাটো থিমফরেস্ট (Envato Themeforest)
  • ব্লুহোস্ট (Bluehost)
  • হোস্টগ্যাটোর এফিলিয়েট নেটওয়ার্ক (Hostgator Affiliate Network)
  • নেইমচিপ (Namecheap)
  • পার্টনারস্ট্যাক.কম (Partnerstack.com)
  • শেয়ারেসেল.কম (Shareasale.com)
  • গো ড্যাডি (Go Daddy) ইত্যাদি।

এফিলিয়েট মার্কেটিং বাংলাদেশ

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও বর্তমানে এই খাতটিতে অনেক এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশে অন্যান্য ডিজিটাল মার্কেটারদের চেয়ে এফিলিয়েট মার্কেটারের সংখ্যা অনেক বেশি। এর কারণ হলো বিগত কয়েক বছর ধরে বেশ কিছু ভালো ভালো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান এফিলিয়েট মার্কেটিংকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে।

এজন্য তাদের প্রচুর পরিমাণে এফিলিয়েট মার্কেটারের প্রয়োজন হয়। তাই তারা প্রতিনিয়ত এফিলিয়েট মার্কেটারের খোঁজ করে৷ সুতরাং, আপনি যদি এই ধরণের মার্কটিং নিয়ে আগ্রহী হোন এবং আপনার যদি এটি নিয়ে নূন্যতম বা মমোটামুটি ধারণা তাকে তাহলে খুব সহজেই আপনি কোনো প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হয়ে যেতে পারবেন।

এফিলিয়েট মার্কেটিং বাংলাদেশ

বাংলাদেশে বেশ কিছু জনপ্রিয় এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের ফিজিক্যাল প্লাটফর্ম রয়েছে, যেমন :

  • দারাজ এফিলিয়েট মার্কেটিং-Daraz Affiliate Marketing

শুধু এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের জন্য নয়, বরং সকল প্রকারের ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের জন্য বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম মার্কেটপ্লেস হলো দারাজ। বর্তমানে সেখানে প্রায় দশ লক্ষ পণ্য আছে। আপনি আপনার ওয়েবসাইট বা যে প্লাটফর্ম ব্যবহার করেন সেটির রেফারেন্স দিয়ে দারাজের পণ্যের মার্কেটিং করবেন। অতঃপর পণ্যটি বিক্রি হলে দারাজ আপনাকে কিছু টাকা কমিশন দিবে।

দারাজ এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে একাউন্ট খোলা খুব সহজ একটি প্রক্রিয়া৷ প্রথমে আপনি দারাজের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে সেখান থেকে দারাজ এফিলিয়েট প্রোগ্রাম (Daraz Affiliate Program) এ ক্লিক করবেন। সেখানে দারাজ এফিলয়েট সাইন আপ ফর্ম (Daraz Affiliate Sign-Up Form) পাবেন। তারা আপনার থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চাইবে। সেগুলো যথাযথভাবে দিলে নিমিষেই আপনার একাউন্ট খোলা হয়ে যাবে।

এখন কথা হচ্ছে এখানে মার্কেটিং করতে আপনার কী কী থাকা লাগবে। মূলত তিনটি জিনিস আপনার অবশ্যই থাকা লাগবে, সেগুলো হলো :

  • নিজস্ব একটি অনলাইন প্লাটফর্ম।
  • এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের ব্যাপারে নূন্যতম ধারণা।
  • ব্যাংক একাউন্ট।

এবার আসি দারাজ থেকে আপনি কেমন অর্থ উপার্জন করতে পারবেন সে প্রসঙ্গে। আসলে এটা পুরোটাই নির্ভর করছে আপনি কতটা সময় দিতে পারছেন এবং কীভাবে আর কেমন মার্কেটিং করছেন তার উপর। শুরুর দিকে হয়তো আপনাকে সময় বেশি দিতে হবে কিন্তু সেই তুলনায় উপার্জন কম হবে। কিন্তু ধীরে ধীরে যখনই আপনি অভিজ্ঞ হয়ে যাবেন তখন দেখবেন অনেক কম সময় ব্যয় করেই আপনি ভালো উপার্জন করতে পারছেন।

  • বিডি শপ-BD SHOP

দারাজের পর বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এফিলিয়েট মার্কেটিং প্লাটফর্ম হলো বিডি শপ৷ এটি মূলত একটি অনলাইন কেনাকাটার প্রতিষ্ঠান যেখানে বিভিন্ন রকম ইলেকট্রনিক গ্যাজেট পাওয়া যায়৷ আপনার যদি এই বিষয়ে আগ্রহ থাকে তাহলে আপনি খুব সহজেই তাদের সাথে যুক্ত হয়ে তাদের পণ্যের মার্কেটিং করতে পারেন।

বিডি শপের সাথে যুক্ত হতে হলে প্রথমে আপনার সেখানে একটি একাউন্ট খুলতে হবে৷ এর জন্য আপনাকে বিডি শপের ওয়েবসাইটে গিয়ে “বিডি শপ এফিলিয়েট প্রোগ্রাম” (BD SHOP Affiliate Program) এ ক্লিক করতে হবে। সেখানে প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়ার পর আপনি তাদের সাথে যুক্ত হয়ে যাবেন। তারপর আপনার পছন্দমতো পণ্যের এফিলিয়েট লিংক নিয়ে সেগুলোর মার্কেটিং শুরু করে দিতে পারবেন। পণ্যের ক্যাটাগরির উপর নির্ভর করবে আপনি কোন পণ্যে কতটা কমিশন পাবেন।

আজকাল ইলেকট্রনিক গ্যাজেট আমাদের নিত্যসঙ্গী হয়ে পরেছে। ঘরে-বাইরে সবখানেই এটি আমাদের সাথেই থাকে। তাই বর্তমানে চারপাশেই এর অনেক চাহিদা। তাই আপনি যদি এগুলোর মার্কেটিং ভালো মতো করতে পারেন তাহলে আপনি এখান থেকে প্রচুর গ্রাহক পাবেন। আর যত বেশি গ্রাহক আপনার মার্কেটিং দেখে পণ্য কিনবে তত বেশি আপনি কমিশন পাবেন বা অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

এছাড়াও বাংলাদেশে এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের বেশ কিছু জনপ্রিয় ডিজিটাল প্লাটফর্ম রয়েছে, যেমন :

  • টপহোস্টবিডি.কম(TopHostBD.com)
  • থিমবাজার (Themes Bazar)
  • হোস্টিং বাংলাফেশ (Hosting Bangladesh)
  • হোস্টএভার.কম (Hostever.com)

এফিলিয়েট মার্কেটিং দ্বারা অর্থ উপার্জন

এখন প্রশ্ন হচ্ছে এফিলিয়েট মার্কেটিং যে করবো এর থেকে আমি মাসে কত টাকা উপার্জন করতে পারবো। এর উত্তর হচ্ছে, এটা পুরোপুরি আপনার উপর। অভিজ্ঞ এফিলিয়েট মার্কেটাররা এফিলিয়েট মার্কেটিং করে লাখ লাখ টাকা অব্দি উপার্জন করে থাকেন। শুরুর দিকে আপনি হয়তো খুব বেশি অর্থ উপার্জন কর‍তে পারবেন না। তবে আপনি যদি ধৈর্য্য ধরে আপনার প্রচেষ্টা চালিয়ে যান তাহলে আপনি দ্রুততম সময়ের মধ্যেই অনেক টাকা উপার্জন করতে পারবেন।

নতুন হিসেবে হয়তো অনেক কিছুই আপনার জানা থাকবেনা৷ কিন্তু আপনি যত সময় দিবেন, যত কাজ করবেন ততই আপনি ধীরে ধীরে বিষয়গুলো আরো ভালো মতো বুঝতে পারবেন। আর কাজ ভালো মতো শিখে গেলে আপনি প্রচুর আয় করতে পারবেন। ততদিন পর্যন্ত আপনাকে ধৈর্য্য ধরে লেগে থাকতে হবে।

ধরুন আপনার একটি ব্লগ বা নিজস্ব কোনো প্লাটফর্ম আছে। এখন আপনি কোনো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হয়ে আপনার ব্যক্তিগত প্লাটফর্মে তাদের কোনো পণ্যের প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন। আপনার মার্কেটিং দেখে মানুষ একমাসে ২০টি পণ্য কিনেছে। ধরি, পণ্যটির দাম ১০০০০ টাকা৷ আর প্রত্যকটি পণ্যের জন্য আপনাকে ২০% কমিশন দেওয়া হবে।

সেক্ষেত্রে আপনার ঐ মাসের আয় হবে = (১০০০০×২০×২০) ÷ ১০০ = ৪০,০০০ টাকা

এফিলিয়েট মার্কেটিং দ্বারা অর্থ উপার্জন

এফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আপনি কত টাকা আয় করতে পারবেন তা কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে। যেমন :

  • আপনি যে পণ্যের মার্কেটিং করছেন তার মূল্য কত।
  • প্রত্যেকটি পণ্য বিক্রিতে আপনাকে কত টাকা কমিশন দেওয়া হচ্ছে।
  • আপনি যে পণ্যগুলো বিক্রি করছেন সেগুলোর চাহিদা কেমন।
  • আপনি মোট কতটি পণ্য বিক্রি করেছেন।

মূলত এই বিষয়গুলির উপর নির্ভর করে আপনি এখান থেকে কত আয় করতে পারবেন৷ তবে চেষ্টা চালিয়ে গেলে খুব কম সময়েই আপনি এই মার্কেটিং কৌশলটি বুঝে ফেলবেন এবং পরবর্তীতে এখান থেকে প্রচুর আয় করতে পারবেন৷

এফিলিয়েট মার্কেটিং কি হালাল?

এফিলিয়েট মার্কেটিং হারাম না হালাল সে ব্যাপারে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। অনেক বিজ্ঞ আলেম এবং বড় বড় ইসলামিক স্কলাররা এটাকে হালাল বলেছেন৷ আবার কেউ কেউ বলেন এটা জায়েজ না৷ তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ এটাকে হালাল বলে অভিহিত করেছেন।

বাস্তবে, আপনার জন্য এফিলিয়েট মার্কেটিং হারাম হবে না হালাল সেটা নির্ভর করছে আপনি কোন পণ্যের মার্কেটিং করছেন, কীভাবে করছেন সেটির উপর। আমাদের ধর্মে কোনটি হারাম আর কোনটি হালাল তা আমরা কম-বেশি সবাইই জানি। আপনার জানা না থাকলে জেনে নিন। যদি ধর্মের দিক থেকে কোনো বাঁধা সরাসরি উল্লেখ না থাকলে তাহলে সেটা হারাম হওয়ার কোনো কারণ নেই।

আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে আপনি কোন উপায়ে মার্কেটিং করছেন সেটা৷ অনেকেই দেখা যায় পণ্য বিক্রির জন্য নানারকম অবৈধ পন্থার আশ্রয় নিয়ে থাকেন। এটা সম্পূর্ণ হারাম। ব্যবসা আপনার জন্য তখনই হালাল হবে যখন আপনি কোনো অবৈধ পন্থার আশ্রয় না নিয়ে বৈধ উপায়ে করবেন।

আপনি যদি কোনো হারাম পণ্য বা অবৈধ পন্থায় মার্কেটিং বা পণ্য বিক্রি না করে থাকেন তাহলে আপনার জন্য এফিলিয়েট মার্কেটিং হারাম হওয়ার কোনো কারণ নেই। এটি সম্পূর্ণ হালাল।

শেষ কথা

বর্তমান সময়ে এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের জনপ্রিয়তা বহুগুণে বেড়ে গিয়েছে। আপনার যদি এটির ব্যাপার আগ্রহ থাকে তাহলে কোনো দ্বিধা-দ্বন্দ ছাড়াই এই মার্কেটিংয়ের সাথে যুক্ত হয়ে যেতে পারেন। পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় দিলে ও প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখলে আপনি এখান থেকে ভালো একটি ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন।

তৌহিদ

ABOUT TOUHID

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *