গাইডব্লগ

ফ্রিল্যান্সিং কী? কিভাবে ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা যায়?

বর্তমান সময়ে “ফ্রিল্যান্সিং-Freelancing”, “ফ্রিল্যান্সার” এই শব্দগুলোর সাথে পরিচিত নন, এমন মানুষ খুব একটা পাওয়া যাবেনা। আপনি যদি কোনো রকম চাকরি করা ছাড়া ঘরে বসেই অর্থ উপার্জন করতে চান, সেক্ষেত্রে আপনার জন্য অর্থ আয়ের একটি ভালো মাধ্যম হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং(freelancing) বা মুক্তপেশা। আজকাল গোটা বিশ্বেই ফ্রিল্যান্সিং এতোটা জনপ্রিয় হয়ে গেছে যে, এর চাহিদা এখন রীতিমতো আকাশচুম্বী। আজকে আমরা ফ্রিল্যান্সিং কী এবং এর সাথে জড়িত সকল কিছু সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানবো।

সূচিপত্র

ফ্রিল্যান্সিং কী?

ফ্রিল্যান্সিং কী

ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জানতে হলে প্রথমেই আমাদেরকে বুঝতে হবে ফ্রিল্যান্সিং কী। ইংরেজি শব্দ ফ্রিল্যান্সিংয়ের(Freelancing) বাংলা অর্থ হচ্ছে মুক্তপেশা। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অধীনে কাজ না করে, মুক্ত বা স্বাধীনভাবে কাজ করার যে প্রক্রিয়া, তাকেই বলা হয় ফ্রিল্যান্সিং। আর যারা ফ্রিল্যান্সিং করেন, তাদেরকে বলা হয় ফ্রিল্যান্সার বা মুক্তপেশাজীবী।

সহজ কথায়, ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে আপনার যে বিষয়ে ধারণা, জ্ঞান, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা রয়েছে সেই বিষয়ক কাজগুলো অন্যের হয়ে করে সেখান থেকে অর্থ উপার্জন করা। এখানে, আপনার ক্লায়েন্ট আপনাকে বিভিন্ন রকম কাজ বা প্রজেক্ট(Project) দিবে। সেগুলো যদি আপনার আয়ত্তাধীন হয়, তাহলে আপনি সেই কাজগুলো সম্পন্ন করে সেখান থেকে আয় করতে পারবেন।

এই কাজগুলো বিভিন্ন রকম হতে পারে। যেমন : ডিজাইনিং, ডিজিটাল সার্ভিস, সেলিং(Selling) সার্ভিস, কন্টেন্ট রাইটিং(Writing), ওয়েব ডেভেলপিং(Developing), ডাটা এন্ট্রি (Data Entry) সহ আরো অনেক রকমের কাজ রয়েছে। এখানে আপনাকে কোনো নির্দিষ্ট সময় মেনে কাজ করতে হবেনা। আপনি আপনার সুবিধা মতো ঘণ্টা/দিন/সপ্তাহ/মাস হিসেবে কাজ করতে পারবেন। কেবল, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই যাতে ক্লায়েন্টকে কাজ বুঝিয়ে দেওয়া যায় সেদিকটা লক্ষ্য রাখতে হবে।

বর্তমানে মানুষ কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির অধীনে কাজ না করে, মুক্ত বা স্বাধীনভাবে কাজ করতে চায়। তাই আজকাল অনেকেই ফ্রিল্যান্সিংয়ের দিকে ঝুঁকছে। ফ্রিল্যান্সিংয়ের বেশিরভাগ কাজই অনলাইনে করা হয়। যার কারণে মানুষ ঘরে বসেই কাজগুলো করে ফেলতে পারে। ফলে পরিশ্রমও কম হয়, কাজও বেশি করা যায় এবং ফলশ্রুতিতে আয়ও বেশি হয়।

ফ্রিল্যান্সিং করে কত টাকা আয় করা যায়?

ফ্রিল্যান্সিং করে কত টাকা আয় করা যায়

ফ্রিল্যান্সিং কী সে সম্পর্কে আমরা জানলাম। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ফ্রিল্যান্সিং করে যে আয় করা যায়, সে আয়ের পরিমাণটা কত? আসলে এটা পুরোটাই নির্ভর করছে আপনার নিজের উপর। আপনার জ্ঞান, দক্ষতা, আপনি কী ধরণের কাজ করছেন আর কতগুলো কাজ করছেন – এই বিষয়গুলোর উপর আপনার আয় নির্ভর করছে। কোনো মাসে ২০০০০ টাকা আবার কোনো মাসে ২০০০০০ টাকাও আয় করা সম্ভব।

অর্থাৎ, ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে টাকা আয়ের কোনো নির্দিষ্ট সীমারেখা নেই৷ কতজন ক্লায়েন্ট আপনাকে কাজ দিচ্ছে আর কতগুলো কাজ আপনি করতে পারছেন, এর উপরই মূলত আপনার আয় নির্ভর করছে। চেষ্টা করবেন, যে বিষয়ে আপনি বেশি দক্ষ বা অভিজ্ঞ, সে বিষয়েই বেশি বেশি কাজ নিতে। সেক্ষেত্রে আপনার আয়ও বেশি হবে।

আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে হয়তো আপনি খুব বেশি অর্থ উপার্জন করতে পারবেন না। তবে আপনি যদি ধৈর্য্য আর নিষ্ঠার সাথে লেগে থাকতে পারেন, তাহলে একসময় আপনার আয় কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে।

কীভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন?

কীভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন

ফ্রিল্যান্সিং কী, ফ্রিল্যান্সিং করে কত টাকা আয় করা সম্ভব এগুলো নিয়ে আমরা মোটামুটি ধারণা পেলাম। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা কীভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবো?

ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য প্রথমেই দরকার সঠিক উপকরণ, অর্থাৎ কম্পিউটার। আপনি ভাবতে পারেন যে তাহলে কি মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করা যায় না? হ্যা, যায়। কিন্তু সেক্ষেত্রে কাজের পরিমাণটা হয়ে যাবে খুবই সামান্য। কারণ ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য আপনাকে অনেক রকম সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হয়, যেগুলো মোবাইলে ব্যবহার করা যায় না। সেক্ষেত্রে আপনাকে সেগুলো কম্পিউটারেই ব্যবহার করতে হবে। এরকম ফ্রিল্যান্সিংয়ের বেশিরভাগ কাজ করতে হলে আপনাকে অবশ্যই কম্পিউটারের সহায়তা নিতে হবে।

এরপর আপনার প্রয়োজন হবে ইন্টারনেট সংযোগের। কারণ আপনি নিজের জন্য কাজ খোঁজা থেকে শুরু করে ক্লায়েন্টকে কাজ জমা দেওয়া এবং এর মধ্যবর্তী সবকিছুতেই আপনার ইন্টারনেট প্রয়োজন হবে।

ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের জন্য আপনার নতুন নতুন প্রজেক্ট বা কাজের দরকার হবে। এখন ক্লায়েন্ট আপনাকে কাজ দেওয়ার জন্য তো তার আপনার সম্পর্কে জানতে হবে, ভালো রিভিউ পেতে হবে। সেটা তিনি কোথা থেকে পাবেন? এর জন্য আপনার সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপ, ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস ইত্যাদি জায়গায় ইন্টারনেটের মাধ্যমে নিজের প্রচার-প্রচারণা বা সেল্ফ-ব্র্যান্ডিং করতে হবে।

আপনি কোন বিষয়ে দক্ষ, কোনটিতে আপনার পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে এগুলো সেখানে উল্লেখ করে দিতে হবে। যাতে মানুষ সহজেই বুঝতে পারে কোনটিতে আপনার ভালো দক্ষতা রয়েছে, কোনটি আপনার বিশেষত্ব ইত্যাদি।

যেমন আপনি এসইও(SEO) এক্সপার্ট এখন কোনো ক্লায়েন্টের তার ওয়েবসাইটের জন্য এসইও এক্সপার্ট দরকার হচ্ছে। এখন আপনার মার্কেটিং দেখে যদি তার পছন্দ হয়, সেক্ষেত্রে তিনি আপনাকে তার কাজ বা প্রজেক্টে নিয়োগ দিবেন। আর যদি আপনি আপনার কাজ দিয়ে তাকে সন্তুষ্ট করতে পারেন তাহলে তার থেকে আপনি ভালো রিভিউ পাবেন এবং পরবর্তীতে তার দরকার হলে তিনি আবারো তার প্রজেক্টে আপনাকে কাজে লাগাবেন।

তাছাড়া তার রিভিউ দেখে সন্তুষ্ট হলে, অন্যান্য ক্লায়েন্টরাও তাদের কাজ বা প্রজেক্টে আপনাকে নিয়োগ করবেন। এভাবেই আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার এগিয়ে যাবে।

ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গাইডলাইন

ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গাইডলাইন

ফ্রিল্যান্সিং কী, কীভাবে শুরু করতে হবে এগুলো আমরা জানলাম। এখন আমরা সফল ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়ার জন্য কী কী ধাপ অনুসরণ করতে হবে সেগুলো সম্পর্কে জানবো :

  • সঠিকভাবে নিজের লক্ষ্য(Goal) সেট করুন

সর্বপ্রথমে, আপনাকে বুঝতে হবে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার নিয়ে আপনার চাওয়া পাওয়া কতটুকু। যেমন আপনি ফ্রিল্যান্সিংয়ের পেছনে কতটুকু সময় ব্যয় করতে চান, কতগুলো কাজ করতে চান এই বিষয়গুলো আপনাকে জানতে হবে। আপনি কি এটাকে ফুল টাইম ক্যারিয়ার হিসেবে নিবেন নাকি চাকরির পাশাপাশি পার্ট-টাইম কাজ করবেন এই বিষয়গুলো আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে।

এই ব্যাপারগুলো সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর আপনি ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার বা ভবিষ্যৎ ভাবনা নিয়ে একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। আর সে অনুযায়ী কাজ করতে থাকুন।

  • কোন নিশ(Niche) বা বিষয় নিয়ে কাজ করতে চান তা নির্ধারণ করুন

লক্ষ্য সেট করার পর, আপনাকে কোন নিশ বা বিষয় নিয়ে কাজ করবেন তা ঠিক করতে হবে। ফ্রিল্যান্সিংয়ে অনেকগুলো বিষয় নিয়েই আপনি কাজ করতে পারেন, যেমন : কন্টেন্ট রাইটিং, ভিডিও এডিটিং(Editing), ভিডিও ক্রিয়েটিং(Creating), কন্টেন্ট মার্কেটিং, ওয়েব ডিজাইনিং, কোডিং(Coding) সহ আরো কত কী। আপনি কোন বিষয় বা বিষয়গুলি নিয়ে কাজ করতে চান তা আপনাকে বেছে নিতে হবে।

নিশ বা বিষয় বাছাইয়ের সময় আপনার কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা দরকার, যেমন :

  • আপনার বেছে নেওয়া বিষয় বা বিষয়গুলোতে যেনো আপনার পূর্ণ জ্ঞান, দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা থাকে। 
  • আপনি যে বিষয় বা বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করবেন ভাবছেন মার্কেটপ্লেসে তার চাহিদা কেমন তা জানতে হবে। 
  • যে বিষয়গুলোর প্রতি আপনার গভীর আগ্রহ এবং আসক্তি রয়েছে সেগুলোই বেছে নিতে হবে। যাতে করে কাজ করতে যেয়ে আপনি বিরক্ত না হোন এবং দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করতে পারেন। 
  • কোন নিশে কাজ করে কেমন আয় করা যায় তা জানতে হবে৷
  • কোন ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্মে কাজ করবেন তা বাছাই করুন

ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করার ভালো একটি প্লাটফর্ম হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলো। অনেকগুলো জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস রয়েছে। তার মধ্যে কোনটিতে আপনি কাজ করতে চান তা নির্ধারণ করুন।

এই মার্কেটপ্লেসগুলোতে ফ্রিল্যান্সাররা নতুন নতুন কাজ কিংবা প্রজেক্টের খোঁজে থাকেন। আর ক্লায়েন্টরা তাদের বিভিন্ন রকম কাজ করানোর জন্য ফ্রিল্যান্সারদের খোঁজেন। আপনার সেল্ফ-ব্র্যান্ডিং বা প্রোফাইল দেখে ক্লায়েন্টের পছন্দ হলে, তিনি আপনাকে তার প্রজেক্ট বা কাজের জন্য নিয়োজিত করবেন।

আর আপনি যদি শুরুর দিকের কাজগুলো ভালো মতো আর সময় মতো করে দিতে পারেন, তাহলে পরবর্তীতে আর আপনাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হবেনা। এরপর থেকে আপনি অজস্র কাজ পেতে থাকবেন। আর সেখান থেকে অর্থ উপার্জন করতে থাকবেন।

কয়েকটি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্ম

কয়েকটি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্ম

ফ্রিল্যান্সিং কী, কীভাবে শুরু করতে হবে, কীভাবে ফ্রিল্যান্সিংয়ে ক্যারিয়ার গড়তে হবে এই ব্যাপারগুলো আমরা জানলাম। এখন কথা হচ্ছে, ফ্রিল্যান্সিং যে আমরা করবো সেটা কোথায় করবো?

ফ্রিল্যান্সিংয়ের বেশ কিছু জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস রয়েছে। নিম্নে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো :

  • ফাইভার(Fiverr)

ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্মগুলোর মধ্যে বহুল প্রচলিত আর বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট হলো ফাইভার.কম(Fiverr.com)। ফাইভারে আপনি বিভিন্ন ধরণের কাজ করতে পারবেন। প্রত্যেকটি কাজ শুরু হয় নূন্যতম ৫ ডলার থেকে। কন্টেন্ট রাইটিং, গ্রাফিক ডিজাইনিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, ভিডিও ক্রিয়েটন(Creation),  ভিডিও এডিটিং, প্রোগ্রামিং, এনিমেশন সহ অসংখ্য বিষয় নিয়ে আপনি এই প্লাটফর্মে কাজ করতে পারবেন।

  • আপওয়ার্ক(Upwork)

বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো আপওয়ার্ক। প্রায় ১২ মিলিয়ন ফ্রিল্যান্সার আজ আপওয়ার্কে কাজ করছেন। প্রতি বছর প্রায় ৩ মিলিয়নের অধিক কাজ এখানে পোস্ট করা হয়। ফ্রিল্যান্সাররা এখান থেকে নিজেদের দক্ষতা এবং সুবিধা অনুযায়ী কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।

  • পিপল পার আওয়ার(People Per Hour)

ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটগুলোর মধ্যে আরেকটি উল্লেখযোগ্য সাইট হলো পিপল পার আওয়ার। নামেই যেমনটা উল্লেখ রয়েছে, এখানে আপনি ঘণ্টাভিত্তিক কাজের পারিশ্রমিক নিতে পারবেন। আবার আপনি চাইলে কাজভিত্তিক পারিশ্রমিকও নিতে পারেন। পেপাল(PayPal), পেওনিয়ার(Payoneer) বা ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে আপনার প্রাপ্য পারিশ্রমিক আপনার কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।

  • ফ্রিল্যান্সার(Freelancer)

ফ্রিল্যান্সার প্লাটফর্মে আপনি প্রায় সব ধরণের কাজের জন্য ক্লায়েন্ট পেয়ে যাবেন। প্রায় ১৩৫০টিরও অধিক ক্যাটাগরির কাজ রয়েছে এখানে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো : অ্যাকাউন্টিং(Accounting), এসইও, ফটোশপ(Photoshop), ফাইন্যান্স(Finance), ওয়েব ডিজাইন, গ্রাফিক ডিজাইন ইত্যাদি।

  • গুরু(Guru)

প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ গুরু ওয়েবসাইটের সাথে বিভিন্নভাবে জড়িত আছে। আজ পর্যন্ত ১০ লাখেরও বেশি কাজ এখান থেকে করানো হয়েছে। প্রায় সবরকম বিষয় বা নিশ নিয়ে আপনি এখানে কাজ করতে পারবেন।

ফ্রিল্যান্সিংয়ের জনপ্রিয় নিশ বা কাজসমূহ

ফ্রিল্যান্সিংয়ের জনপ্রিয় নিশ বা কাজসমূহ

ফ্রিল্যান্সিং কী, কীভাবে শুরু করবেন, কোথায় করবেন এগুলো আমরা জানলাম। এখন আমরা জনপ্রিয় কিছু ফ্রিল্যান্সিং কাজ সম্পর্কে জানবো।

ফ্রিল্যান্সিংয়ের অসংখ্য জনপ্রিয় কাজ বা নিশ রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো :

  • ডিজিটাল মার্কেটিং

আজকাল ছোট-বড় ব্যবসায়ী থেকে নতুন উদ্যোক্তা সকলকেই তাদের ব্যবসা, পণ্য, ব্র্যান্ড বা সেবার প্রচার ও প্রসারের জন্য ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের আশ্রয় নিতে হয়। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই এই কাজগুলো ফ্রিল্যান্সার ডিজিটাল মার্কেটারদের মাধ্যমে করিয়ে নেয়। তাই ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্মগুলোতে প্রায়ই ডিজিটাল মার্কেটার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখা যায়৷

আপনার যদি ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে ধারণা থাকে এবং আপনি যদি এই ব্যাপারে অভিজ্ঞ হয়ে থাকেন তাহলে সহজেই আপনি সেখান থেকে কাজ পেতে পারেন। আর আপনার কাজ দেখিয়ে তাদেরকে সন্তুষ্ট করতে পারলে পরবর্তীতে তাদের থেকে এবং তাদের মাধ্যমে অন্যদের থেকেও আপনি অনেক কাজ পাবেন।

  • সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন(এসইও)

আপনার ওয়েবসাইটকে গুগলে র‌্যাংক করানোর জন্য যে প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয় তাকে বলা হয় এসইও। এসইও ট্রাইব্যুনালের সমীক্ষা মতে, দৈনিক প্রায় ৫.৬ বিলিয়নবার মানুষ গুগলে বিভিন্ন বিষয়ে সার্চ করে। সেই সার্চ লিস্টের প্রথম পেজে যেনো আপনার ওয়েবসাইটটি দেখায়, এজন্যই মূলত এসইও করা হয়।

বেশিরভাগ ওয়েবসাইট মালিকেরাই তাদের নিজেদের ওয়েবসাইট এসইও করানোর জন্য এসইও এক্সপার্ট নিয়োগ দিয়ে থাকেন। প্রায়ই তারা ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে এসইও এক্সপার্ট খুঁজে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে থাকেন।

এসইও এর জন্য আপনার কিছু বিষয়ে ধারণা থাকা জরুরী। যেমন : কন্টেন্ট রাইটিং, কন্টেন্ট মার্কেটিং, ওয়ার্ডপ্রেস(WordPress), ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, লিংক বিল্ডিং, অন পেজ এসইও(On Page Seo), অফ পেজ এসইও(Off Page Seo) ইত্যাদি৷ যদি উক্ত বিষয়গুলোতে আপনার ভালো ধারণা থাকে তাহলে আপনি ঐ বিজ্ঞপ্তিগুলো থেকে আপনার পছন্দ অনুযায়ী এসইও এক্সপার্টের কাজ করতে পারেন।

  • ইমেইল মার্কেটিং

বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিংয়ের বহুল জনপ্রিয় কাজগুলোর ভিতর একটি হলো ইমেইল মার্কেটিং। যখন আপনি ইমেইল ব্যবহার করে আপনার ব্যবসা, পণ্য, ব্র্যান্ড বা সেবার মার্কেটিং করবেন, তখন তাকে বলা হয় ইমেইল মার্কেটিং৷

ব্যবসায়ীরা আজকাল নিজেদের ব্যবসার প্রচার ও প্রসারে মার্কেটিংয়ে অনেক নতুনত্ব আনার চেষ্টা করছেন। তারই অংশ হলো ইমেইল মার্কেটিং৷ যদিও ইমেইল মার্কেটিং এখনো এতোটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেনি বলে, ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্মগুলোতে বিজ্ঞপ্তি দিয়েও অনেক সময় তারা সঠিক ও দক্ষ ইমেইল মার্কেটার পান না।

তাই আপনার যদি ইমেইল মার্কেটিং সম্বন্ধে পর্যাপ্ত ধারণা থাকে এবং আপনি যদি এই বিষয়ে দক্ষ হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি তাদের হয়ে ইমেইল মার্কেটিং করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

  • সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

বর্তমান সময়ে  আপনার পণ্য বা সেবা সম্বন্ধে মানুষকে জানানোর সবচেয়ে কার্যকরী মাধ্যম হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে তাই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটারদেরও এখন অনেক চাহিদা।

মূলত সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন পণ্য বা সেবা সম্পর্কে মানুষের ধারণা বা মনোভাব বোঝা, পণ্য বা সেবা সম্পর্কে গ্রাহকের সমস্ত জিজ্ঞাসার উত্তর দেওয়া, আকর্ষণীয় উপায়ে মার্কেটিং করে পণ্যের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করাই হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের উদ্দেশ্য। তাই আপনার মধ্যে এই গুণাবলিগুলো থাকলে ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটগুলোতে এই বিষয়ক কাজগুলো আপনি করতে পারেন।

ফ্রিল্যান্সিংয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় কাজগুলোর তালিকা করলে হয়তো গ্রাফিক্স ডিজাইনিং উপরের দিকেই থাকবে। টি-শার্ট ডিজাইন, লোগো ডিজাইন থেকে শুরু করে ব্যানার ডিজাইন, পোস্টার ডিজাইন সহ সবকিছুতেই রয়েছে গ্রাফিক্স ডিজাইনের অবদান। এজন্য বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্মগুলোতে গ্রাফিক্স ডিজাইন সংক্রান্ত কাজ বা গ্রাফিক্স ডিজাইনার খোঁজার বিজ্ঞপ্তিই বেশি চোখে পরে৷

গ্রাফিক্স ডিজাইনিংয়ের কিছু সফটওয়্যার বা টুল রয়েছে। আপনাকে সেগুলো সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে। তাহলে আপনি ক্লায়েন্টের পছন্দ মতো ডিজাইন করে দিতে পারবেন এবং সেখান থেকে আয় করতে পারবেন৷

  • ওয়েব ডিজাইন

কোনো ওয়েবসাইট সুন্দর করে সাজানোর প্রক্রিয়াকেই ওয়েব ডিজাইনিং বলে৷ অর্থাৎ, ওয়েবসাইটের গঠন এবং নকশা বা ডিজাইন কেমন হবে, লোগো কোথায় এবং কেমন হবে, ফন্ট ক্লালার ও সাইজ কোনটা হবে, ইমেজ ও কন্টেন্ট কোথায় বসবে এই সবকিছুই ওয়েব ডিজাইনিংয়ের অন্তর্ভুক্ত।

ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্মগুলোতে ওয়েব ডিজাইনের প্রচুর চাহিদা ও কাজ রয়েছে। আপনি যদি ওয়েব ডিজাইনিংয়ে অভিজ্ঞ ও পরিপক্ব হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি এই সুযোগটি লুফে নিতে পারেন।

  • লোগো ডিজাইন

আজকাল প্রায় সব প্রতিষ্ঠান, সংস্থা, সংগঠন, অফিস, দোকান বা রেস্টুরেন্ট, নিউজ পোর্টাল, ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুক পেজ থেকে শুরু করে প্রায় সবকিছুরই আলাদা লোগো আছে যা দেখে তাদেরকে শনাক্ত করা যায়৷ যেমন ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রামের লোগো দেখে আপনি খুব সহজেই তাদেরকে শনাক্ত করতে পারবেন।

বর্তমানে লোগো ডিজাইন অসংখ্য ফ্রিল্যান্সারদের পছন্দের তালিকায় উপরের দিকে স্থান পায়। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে লোগো ডিজাইন নিয়ে অনেকগুলো কাজ রয়েছে। আপনি খুব সহজেই সেখান থেকে কাজ পেতে পারেন।

  • ওয়েব ডেভেলপমেন্ট

কোনো ওয়েবসাইটের যাবতীয় ফাংশনাল কাজ করার জন্য যে কোডিং করা হয়, তাকেই ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বলা হয়। মূলত, ক্লায়েন্টের চাহিদা অনুযায়ী ইউজার ফ্রেন্ডলি বা ব্যবহার উপযোগী ওয়েবসাইট তৈরীর জন্য ওয়েব ডেভেলপমেন্ট করা হয়।

ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটগুলোতে এই ওয়েব ডেভেলপমেন্ট নিয়েও অনেকগুলো কাজ রয়েছে। আপনি যদি নিজেকে দক্ষ ও অভিজ্ঞ ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন, সেক্ষেত্রে আপনি এই কাজগুলো করে সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পেতে পারেন। অন্যান্য কাজগুলোর তুলনায় এই ক্ষেত্রে পারিশ্রমিকটা কিছুটা বেশি হয়ে থাকে।

  • ডাটা এন্ট্রি(Data Entry)

ফ্রিল্যান্সিংয়ের সবচেয়ে সহজ কাজগুলোর একটি হলো ডাটা এন্ট্রি করা। মূলত, কোনো দরকারী তথ্য ও উপাত্ত সাইটে আপলোড করার মাধ্যমে ডাটা এন্ট্রি করা হয়৷ যদিও কাজটি খুবই সহজ হওয়ায় এই ক্ষেত্রে খুব বেশি উপার্জন হয়না, তবুও আশার কথা হচ্ছে তেমন কোনো দক্ষতা ছাড়াই কাজটি করা যায় বলে বেকারত্ব নিরসনের এটি একটি ভালো মাধ্যম।

  • কন্টেন্ট মার্কেটিং

আপনার ব্যবসা, ব্র্যান্ড, পণ্য বা সেবার প্রচার ও প্রসারের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে আকর্ষণীয় কন্টেন্ট(সেটা হতে পারে ভিডিও, অডিও, আর্টিকেল বা যেকোনো কিছুই) তৈরির মাধ্যমে তা টার্গেট অডিয়েন্স বা গ্রাহকের কাছে পৌঁছানোর জন্য যে মার্কেটিং করা হয়, তাকেই কন্টেন্ট মার্কেটিং বলে।

অনেক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান আজকাল তাদের ব্যবসা, ব্র্যান্ড বা পণ্যের প্রচার ও প্রসারের জন্য কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের আশ্রয় নেয়। এজন্য তাদের কন্টেন্ট মার্কেটার প্রয়োজন হয়। প্রায়ই তারা ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্মগুলোতে কন্টেন্ট মার্কেটার চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দেন। তাদের দেওয়া শর্তাবলী ও কাজগুলো আপনার সাথে মিললে, সেগুলো সম্পন্ন করে সেখান থেকে আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারেন।

ফ্রিল্যান্সিংয়ের সুবিশাল ক্ষেত্রসমূহের মাত্র কয়েকটি নিয়ে এখানে আলোচনা করা হয়েছে। বাস্তবে এর পরিধি আরো অনেক বেশি বিস্তৃত।

ফ্রিল্যান্সিংয়ের সুবিধা ও অসুবিধা

ফ্রিল্যান্সিংয়ের সুবিধা ও অসুবিধা

ফ্রিল্যান্সিং কী, কীভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন, কোথায় করবেন, ফ্রিল্যান্সিংয়ের জনপ্রিয় কাজগুলো কী কী এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা ইতিমধ্যেই আলোচনা করেছি। এখন আমরা ফ্রিল্যান্সিংয়ের সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে জানবো।

সুবিধা :
  • ঘরে বসেই অর্থ উপার্জন করা যায়।
  • মুক্ত বা স্বাধীনভাবে কাজ করা যায়।
  • কাজের কোনো সীমা নেই। আপনার যতগুলো ইচ্ছা ততগুলো কাজ করতে পারবেন। যত বেশি কাজ করা যায়, আয়ও তত বেশি হয়। 
  • কোনো নির্ধারিত সময় মেনে কাজ করতে হয় না।
  • একইসঙ্গে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করার সুযোগ পাওয়া যায়।
  • একক বা দলগত যেভাবেই ইচ্ছা সেভাবেই কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
  • নিজের পছন্দের কাজ বেছে নেওয়ার পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে।
  • নিজের কাজের মূল্য নিজেই নির্ধারণ করা যায়। 
  • অল্প সময়ে অনেক বেশি আয় করা যায়। 
  • কোনো রকম বিনিয়োগ করতে হয় না।
  • আপনার ইচ্ছা মতো আপনি কাজ করতে এবং কাজ থেকে ছুটি নিতে পারবেন। 
  • নিজের জ্ঞান, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বাড়ানোর সুযোগ পাওয়া যায় ইত্যাদি।
অসুবিধা :
  • একাউন্ট ব্যান হওয়ার ভয় থাকে।
  • কাজের কোনো নিরাপত্তা নেই। এমনও মাস যেতে পারে যে মাসে কোনো কাজই পাওয়া যাচ্ছেনা। 
  • প্রতিষ্ঠিত হতে সময় লাগে।
  • আমাদের দেশে এখনো এই পেশাটি এতোটা জনপ্রিয় না হওয়ায় অনেক জায়গাতেই ফ্রিল্যান্সারদের সামাজিকভাবে হেয় করা হয়। 
  • প্রত্যেক মাসে উপার্জন একই হয় না। কোনো মাসে দেখা যায় খুব বেশি হলেও আবার আরেক মাসে খুবই কম হয়৷ 
  • দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করতে হয় বলে মাথা ব্যথা, উচ্চ রক্তচাপ, শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাওয়া, চোখের ক্ষতি সহ বিভিন্ন রকম শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। 
  • ফ্রিল্যান্সিংয়ে অনেক সময় রাত জেগে কাজ করতে হয়, যা অনেকেরই অভ্যাস নেই। তাদের ক্ষেত্রে এটি একটি সমস্যা।
  • বেশিরভাগ সময়ই কাজের মধ্যে থাকতে হয় বলে একাকীত্ব, বিষণ্নতা ও একঘেয়েমির সৃষ্টি হতে পারে। 
  • কোনো কারণে প্রজেক্ট বা কাজ ঠিকঠাক মতো শেষ করতে না পারলে পারিশ্রমিক থেকে বঞ্চিত হতে হয় এবং এটা তাদের প্রোফাইল এবং ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারেও প্রভাব ফেলে।
  • বর্তমানে ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যা অনেক বেশি৷ তাই এই প্লাটফর্মে টিকে থাকতে হলে আপনাকে সর্বদা তাদের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হয়।

যেকোনো কিছুরই কিছু না কিছু সমস্যা বা অসুবিধা থাকবেই। কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং যে সুবিধাগুলো দিচ্ছে সেই তুলনায় এগুলা খুব বড় কিছু না। একটু চেষ্টা করলে এই সমস্যাগুলোরও সমাধান করে নেওয়া যায়।

শেষ কথা

ফ্রিল্যান্সিং কী এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আমরা বিস্তারিত জানলাম। তবে মাথায় রাখতে হবে যে, ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল ক্যারিয়ার গড়তে হলে আপনাকে অবশ্যই এর কাজের ক্ষেত্রগুলোর অন্তত কয়েকটির ব্যাপারে ভালো মতো জানতে হবে এবং সেগুলোতে দক্ষ ও অভিজ্ঞ হতে হবে। তবেই আপনার একটি অসাধারণ ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়ে উঠবে। 

তৌহিদ

ABOUT TOUHID

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *