গাইডব্লগ

ডিজিটাল মার্কেটিং কী? কীভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখবেন?

বর্তমান যুগ প্রযুক্তির যুগ। প্রযুক্তির ক্রমাগত উন্নয়নের সাথে তাল মিলাতে আমাদেরকেও প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বিষয় আবিষ্কার করতে হয়। তেমনই একটি যুগোপযোগী আবিষ্কার হলো ডিজিটাল মার্কেটিং। আমরা কম-বেশি সবাইই এই “ডিজিটাল মার্কেটিং” শব্দটির সাথে পরিচিত। কিন্তু ডিজিটাল মার্কেটিং বলতে আসলে কী বোঝায় এবং এর বিস্তৃতি যে কতটা বৃহৎ সে ব্যাপারে আমরা অনেকেই জানি bache plastique transparente jardin botines para llevar con falda nietaufsatz akkuschrauber makita misura cuccia cane taglia media reis kochen mit salz que es bueno para las manos dormidas beyonce i am yours dvd outlet under armour es store bateau 120×180 tv 50 pulgadas 4k nike kawhi leonard jersey elite trainer box de destinées radieuses תיקון דלתות זכוכית בתל אביב tefal pentole ingenio borse hogan 2016 prezzi amazon না। আজকে আমরা ডিজিটাল মার্কেটিং কী, কীভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখবেন এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলি সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে চেষ্টা করবো।

অবশ্যই পড়বেন

গ্রাফিক্স ডিজাইন কী

টি-শার্ট ডিজাইন কী

লোগো ডিজাইন কী

মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট কী

সূচিপত্র

মার্কেটিং কী?

মার্কেটিং কী

ডিজিটাল মার্কেটিং কী তা বুঝতে হলে আমাদের প্রথমে জানতে হবে মার্কেটিং কী। বেশিরভাগ মানুষ মনে করেন, কারো কাছে পণ্য বিক্রি করার কৌশলই হলো মার্কেটিং। কিন্তু বাস্তবে এর পরিধি অনেক বিস্তৃত। আপনার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, পণ্য বা সেবা, ব্র্যান্ডকে সাধারণ মানুষ ও মার্কেটপ্লেসে প্রচার-প্রচারণা করে সেগুলোর মূল্য ও চাহিদা বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে বলা হয় মার্কেটিং।

বড় কোনো প্রতিষ্ঠান বা বড় ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে নতুন কোনো উদ্যোক্তা – সকলকেই মার্কেটিংয়ের আশ্রয় নিতে হয়। এটি মূলত করা হয় যাতে গ্রাহক আপনার পণ্য বা সেবা সম্পর্কে জানে এবং সেগুলো কিনতে উৎসাহিত হয়।

অনেকে মনে করেন, মার্কেটিং আর ডিজিটাল মার্কেটিং একই বিষয়। আসলে এদের মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে। সেগুলো আমরা পরবর্তীতে বুঝতে পারবো।

ডিজিটাল মার্কেটিং কী ?

ডিজিটাল মার্কেটিং কী

ডিজিটাল মার্কেটিং বলতে সাধারণত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পণ্যের প্রচারণা চালানোকেই বোঝায়। কিন্তু বিষয়টি কেবলমাত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই সীমাবদ্ধ নয়। বাস্তবিক অর্থে, ইলেকট্রনিক মিডিয়া ব্যবহার করে আপনার পণ্য, ব্র্যান্ড বা প্রতিষ্ঠানের প্রচারণা চালানোই হলো ডিজিটাল মার্কেটিং।

অর্থাৎ, টেলিভিশন, রেডিও, মোবাইল মেসেজিং বা ফোন কল, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন, ইলেকট্রনিক বিলবোর্ড, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম, সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন, সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং, ইমেইল মার্কেটিং ইত্যাদি ব্যবহার করে কোনো পণ্য, ব্র্যান্ড বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন প্রচার করাকেই বলে ডিজিটাল মার্কেটিং।

ডিজিটাল মার্কেটিং কেন প্রয়োজন?

ডিজিটাল মার্কেটিং কেন প্রয়োজন

একটা সময় রাস্তায় রাস্তায় পোস্টার টাঙিয়ে, ব্যানার টাঙিয়ে, বিলবোর্ড লাগিয়ে, মাইকিং করে, এমনকি কোনো প্রতিষ্ঠান বা রাস্তায় দাঁড়িয়ে এরকম আরো বিভিন্নভাবে পণ্যের প্রচারণা চালানো হতো। এখনও যে এভাবে প্রচারণা চালানো হয়না তা নয়, কিন্তু সময় আর যুগের সাথে তাল মিলাতে প্রচারণার ক্ষেত্রেও নতুন নতুন পন্থা অবলম্বন করতে হয়। আর এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে সময়োপযোগী আবিষ্কার হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং৷

এখন কথা হচ্ছে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং কেন করবেন? এর উত্তর হচ্ছে, আকর্ষণীয় উপায়ে আপনার পণ্য, ব্র্যান্ড বা প্রতিষ্ঠানের প্রচারণা চালিয়ে ক্রেতাদের মনোযোগ আকর্ষণের জন্য। ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আপনি অল্প সময়ে অনেক বেশি গ্রাহকের কাছে পৌঁছাতে পারবেন। বর্তমানে আপনার কোন পণ্যটি কেমন বিক্রি হবে, কোন পণ্যের চাহিদা কেমন, কোন পণ্যটি গ্রাহকরা বেশি পছন্দ করছে এসব বোঝার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কোনো বিকল্প নেই। আপনার পণ্য, ব্র্যান্ড, প্রতিষ্ঠানের ভালো দিক, খারাপ দিক এগুলো চিহ্নিত করার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং খুবই কার্যকরী।

তাছাড়া ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে বাজারে আপনার কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানের অবস্থা কেমন এবং তাদের পণ্য বা ব্র্যান্ডের ভালো মন্দ সবকিছুই আপনি জানতে পারবেন। এতে করে আপনার ব্যবসায়িক উন্নতির জন্য কী কী করা দরকার তা আপনি খুব সহজেই বুঝতে পারবেন। আপনার কোন পণ্যটিতে আরো পরিবর্তন বা উন্নতি করা যায়, কোন পণ্যটিতে কী কী ঘাটতি রয়েছে সবকিছুই আপনি এখান থেকে জানতে পারবেন।

মোট কথা, আপনার ব্যবসার সামগ্রিক উন্নতিতে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের প্রকারাভেদ

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের প্রকারাভেদ

ডিজিটাল মার্কেটিং মূলত দুই প্রকার।

  • অনলাইন মার্কেটিং।
  • অফলাইন মার্কেটিং।

অনলাইন মার্কেটিং :

কোনো পণ্য বা সেবা গ্রাহকের কাছে পৌঁছানোর জন্য অনলাইনে যে সকল কার্যক্রম বা প্রচারণা চালানো হয়, তাকে অনলাইন মার্কেটিং। আপনি আপনার পণ্য গ্রাহকের কাছে পৌঁছাতে যে সকল পদক্ষেপ নিবেন সবই অনলাইন মার্কেটিংয়ের আওতাভুক্ত। পণ্যের প্রচার-প্রচারণা চালানোর সবচেয়ে উৎকৃষ্ট এবং আধুনিক পদ্ধতি হলো এই অনলাইন মার্কেটিং।

অনলাইন মার্কেটিংয়ের আবার বেশ কয়েকটি ধাপ রয়েছে৷ সেগুলো নিচে আলোচনা করা হলো :

সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন

সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের একটি অন্যতম অংশ হলো এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন। সহজ কথায়, আপনার অ্যাপস বা ওয়েবসাইটকে বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন যেমন গুগল, ইয়াহু, বিং ইত্যাদি ফ্রেন্ডলি করে র‍্যাংকিং বা সার্চ লিস্টের উপরের দিকে নিয়ে আসার যে প্রক্রিয়া বা পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়, তাকেই সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন বা এসইও বলে।

ধরুন আপনি একটি গান বা সিনেমা ডাউনলোড করতে চাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে আপনি স্বাভাবিক ভাবেই সেই গান বা সিনেমার নাম লিখে গুগলে সার্চ করবেন। তারপর দেখবেন গুগল আপনাকে কিছু ওয়েবসাইট বা লিংক দেখাচ্ছে যেখান থেকে আপনি আপনার কাঙ্খিত জিনিসটি ডাউনলোড করতে পারেন। আপনি দেখবেন যে প্রথম পেজে কিছু ওয়েবসাইট বা লিংক দেখাচ্ছে, আবার পরের পেজেও এরকম কিছু লিংক বা ওয়েবসাইট দেখাচ্ছে। আপনি ভাবতেই পারেন যে দ্বিতীয় পেজে যে ওয়েবসাইট বা লিংকগুলো রয়েছে সেগুলো কেন প্রথম পেজে আসলো না।

এর কারণ হচ্ছে ওই ওয়েবসাইট বা লিংকগুলো এসইও ফ্রেন্ডলি করে ফেলা হয়েছে। যার কারণে সার্চ করার পর সেগুলো সার্চ লিস্টের প্রথম পেজে চলে এসেছে। আপনিও চাইলে এই কৌশল অবলম্বন করতে পারেন। আপনার ওয়েবসাইটও যদি এসইও ফ্রেন্ডলি করা থাকে তাহলে সেটিও র‍্যাংকিংয়ে উপরের দিকে চলে আসবে। এই মার্কেটিং সেবাটিতে কোনো খরচ দিতে হয় না।

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে এসইও খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ধরুন, আপনার ওয়েবসাইটটি এসইও করা এবং সেখানে আপনি আপনার পণ্য বা ব্র্যান্ডের প্রচারণা চালিয়েছেন। এখন যখন কেউ সেই পণ্যটির নাম লিখে সার্চ করে তখন আপনার ওয়েবসাইট টি সার্চ লিস্টের শুরুর দিকে এসে যাবে কারণ সেটি এসইও ফ্রেন্ডলি। স্বাভাবিকভাবেই মানুষ আপনার ওয়েবসাইটেই প্রবেশ করবে যেহেতু সেটি প্রথম পেজে রয়েছে।

আপনি যদি আপনার প্রচারণা ভালো মতো চালাতে পারেন, সেক্ষেত্রে গ্রাহক ও আপনার পণ্য বা সেবাটি নিতে আগ্রহ বোধ করবে। পাশাপাশি আপনার ওয়েবসাইট বা পণ্যেরও প্রচার হবে।

আবার, অনেক সময় দেখা যায় আপনি প্রচার-প্রচারণা ভালো মতো চালিয়েও গ্রাহকের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না, কারণ আপনার ওয়েবসাইটটি এসইও করা নেই। সেক্ষেত্রে আপনার এতো প্রচেষ্টা সবই ব্যর্থ হয়ে যায়। তাই বলা যায়, ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে এসইওয়ের ভূমিকা অপরিহার্য।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

পৃথিবীর প্রায় ৭০০ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় ২৫০ কোটি মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে। অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ। এই বিপুল সংখ্যক মানুষের কাছে খুব সহজেই আপনি আপনার পণ্যের প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ব্যবহার করে এই বিশাল জনগোষ্ঠীর কাছে পণ্য বা সেবার প্রচারণা চালানোর কার্যক্রমকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বলা হয়। আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কী এ বিষয়ে আমাদের পোস্টটি পড়তে পারেন।

বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং খুব জনপ্রিয় একটি ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন ফেসবুক, টুইটার, ইন্সটাগ্রাম, লিংকেডিন, পিন্টারেস্ট, স্ন্যাপচ্যাট ইত্যাদি প্লাটফর্মে পণ্যের প্রচার প্রচারণা চালিয়ে মার্কেটিং ক্যাম্পেইন করাই হলো সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং।

এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলো প্রত্যেকটিই একটি আরেকটি থেকে ভিন্ন। যার জন্য দেখা যায়, মানুষ একটি মাধ্যমে সীমাবদ্ধ না থেকে কয়েকটি মাধ্যম ব্যবহার করে। তাই আপনি যত বেশি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করবেন, তত বেশি আপনার পণ্যটি মানুষের কাছে পৌঁছাবে। এজন্যই বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এতো জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

যখন এক বা একাধিক মার্কেটার কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হয়ে ঐ প্রতিষ্ঠানের পণ্যের প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে তা গ্রাহকদের কাছে পৌঁছান, তখন তাকে বলা হয় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং৷ পরবর্তীতে তারা কেমন প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন, কত সংখ্যক গ্রাহকের কাছে তা পৌঁছেছে, গ্রাহক পণ্যগুলো কতটা পছন্দ করছে – সেসব কিছুর উপর ভিত্তি করে তাদেরকে একটি নির্দিষ্ট কমিশন বা অর্থ দেওয়া হয়।

অর্থাৎ, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে এমন একটি মার্কেটিং পদ্ধতি যেখানে আপনি আপনার নিজের কোনো পণ্যের নয়, বরং অন্য কারো পণ্যের প্রচারণা চালাচ্ছেন। আপনার জন্য হয়তো এটি কেবল অর্থ উপার্জনের একটি মাধ্যম, কিন্তু আপনি যার বা যে প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করছেন তাদের জন্য এটি ডিজিটাল মার্কেটিং। তাই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংও ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

ইমেইল মার্কেটিং

ইমেইল মার্কেটিং

ইমেইলের মাধ্যমে যখন আপনার পণ্য বা সেবা মানুষের কাছে পৌঁছাতে প্রচারণা চালানো হয় তখন তাকে বলা হয় ইমেইল মার্কেটিং। বর্তমান সময়ের অন্যতম একটি ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশল হলো ইমেইল মার্কেটিং। আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি এই কৌশলের আরওআই(ROI) বা রিভিনিউ অন ইনভেস্টমেন্ট প্রায় ৩৮০০%! অর্থাৎ, আপনি যদি ইমেইল মার্কেটিংয়ের জন্য এক ডলার খরচ করেন, তাহলে আপনি প্রায় ৩৮ ডলার সমমূল্য ফেরত পাবেন৷ আপনি যদি ইমেইল মার্কেটিং সম্পর্কে জানতে চান তাহলে ইমেইল মার্কেটিং কী এবং কীভাবে ইমেইল মার্কেটিং করবেন এ বিষয়ে আমাদের পোস্টটি পড়তে পারেন।

বিশেষ করে যাদের টার্গেট অডিয়েন্স আমেরিকা, লন্ডন ও কানাডার মানুষজন, তাদের ক্ষেত্রে এই ইমেইল মার্কেটিং খুব কার্যকরী। সমীক্ষা মতে, এই দেশগুলোর প্রায় ৭০% মানুষ নিজ প্রয়োজনে বা যেকোনো কারণে ইমেইল দেখে থাকেন। যার কারণে তাদের কাছে পণ্য বা সেবার প্রচারণা অনেক বেশি পৌঁছায়।

অল্প সময়ে অনেক বেশি মানুষের কাছে আপনার পণ্যের প্রচারণা চালানোর সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হচ্ছে ইমেইল মার্কেটিং। এই মার্কেটিং কৌশলে প্রথমে বিভিন্ন পদ্ধতিতে অনেকগুলো প্রচারণামূলক মেইল সংগ্রহ করা হয়। পরে তা একত্র করে এক ক্লিকেই টার্গেট অডিয়েন্সের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই তা হাজার হাজার টার্গেট অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছে যায়। এতো সহজলভ্য ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশল আর নেই।

কন্টেন্ট মার্কেটিং

কন্টেন্ট মার্কেটিং

যখন কোনো একটি পণ্য সম্পর্কে ব্লগিং করে বিস্তারিত জানিয়ে বা ছবি, পোস্টারিং বা ভিডিওচিত্রের মাধ্যমে আকর্ষণীয় উপায়ে পণ্যটির প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে তা গ্রাহকের কাছে পৌঁছানোর কার্যক্রমকে কন্টেন্ট মার্কেটিং বলা হয়। বর্তমান সময়ে কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের চাহিদা অনেকগুণে বেড়ে গেছে। আপনি যদি ইমেইল মার্কেটিং সম্পর্কে জানতে চান তাহলে কন্টেন্ট মার্কেটিং কী এবং কীভাবে কন্টেন্ট মার্কেটিং করবেন এ বিষয়ে আমাদের পোস্টটি পড়তে পারেন।

কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে প্রথমেই আপনাকে যেটি করতে হবে তা হলো ইউনিক এবং আকর্ষণীয় কন্টেন্ট তৈরি করা। আপনি আপনার কন্টেন্টটি যত সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারবেন, তত বেশি গ্রাহক আপনার পণ্যটির ব্যাপারে উৎসাহিত হবে৷ বিশেষ করে এসইও ফ্রেন্ডলি কন্টেন্ট তৈরি করা গেলে সেটি অনেক বেশি মানুষের কাছে পৌঁছায়।

প্রধানত চারটি উপায়ে কন্টেন্ট মার্কেটিং করা হয়। তা হলো :

  • ব্লগিং।
  • ছবি।
  • ভিডিওচিত্র।
  • ইনফোগ্রাফিক্স।
সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং

অনলাইন মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে একজন ব্যবসায়ীকে অবশ্যই সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এবং এর সাথে সংযুক্ত বিষয়গুলি সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। যেকোনো পণ্য বা ব্র্যান্ডের প্রচারণা ও তার উন্নতির সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং।

সহজ কথায়, সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে আপনার ওয়েবসাইটের বিজ্ঞাপন দিয়ে বা প্রচার-প্রচারণা চালানোর প্রক্রিয়াকে বলা হয় সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং৷ এই ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি বা দলের সমন্বয়ে সার্চ ইঞ্জিনগুলোকে অর্থ দিয়ে অন্যান্য প্রতিযোগিদের পিছনে ফেলে আপনার ওয়েবসাইটটিকে গুগলে র‍্যাংকিংয়ে উপরের দিকে নিয়ে আসা হয়।

অনেকে মনে করেন যে সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন আর সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং একই। আসলে বিষয়টি মোটেও তা নয়। দুইটার মধ্যে মূল পার্থক্য হলো সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশনে কোনো অর্থ খরচ হয় না, কিন্তু সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিংয়ে আপনাকে অর্থ খরচ করতে হয়।

সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন করে আপনি নিজেই আপনার ওয়েবসাইট টিকে সার্চ লিস্টের উপরের দিকে নিয়ে আসতে পারেন। আর সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এ আপনার ওয়েবসাইটটি এসইও ফ্রেন্ডলি না হলেও সার্চ ইঞ্জিনকে অর্থ দেওয়ার কারণে আপনার ওয়েবসাইটটি সার্চ লিস্টের উপরের দিকে দেখাবে। এমনকি যাদের ওয়েবসাইট এসইও ফ্রেন্ডলি তাদেরও আগে আপনার ওয়েবসাইটটি দেখাবে, কারণ আপনি সার্চ ইঞ্জিনগুলোকে অর্থ দিয়েছেন।

বর্তমানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ী বা ব্যবাসায়িক প্রতিষ্ঠান সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে তাদের প্রচারণার কার্যক্রম চালান।

এগুলোর বাইরেও আরো বিভিন্নরকম অনলাইন মার্কেটিং কৌশল রয়েছে। তবে মূলত এগুলোয় ব্যবহার করা হয়।

অফলাইন মার্কেটিং :

অফলাইন মার্কেটিং হল বিজ্ঞাপন বা প্রচার-প্রচারণার সবচেয়ে পুরাতন এবং চিরায়িত পদ্ধতি। অনলাইন মার্কেটিং আসার আগ পর্যন্ত এটিই ছিলো মার্কেটিংয়ের একমাত্র প্রক্রিয়া। এখনো অফলাইন মার্কেটিং অনেক বেশিই জনপ্রিয়। বিশেষ করে গ্রাম এলাকায় বা মফস্বল শহরে এটি অনেক বেশি ব্যবহার করা হয়।

তবে অফলাইন মার্কেটিং এর কার্যকারিতা অনলাইন মার্কেটিংয়ের মতো নয়। অনলাইন মার্কেটিংয়ে প্রচার-প্রচারণা কেমন হচ্ছে তা যেমন আপনি নিজেই বুঝতে পারেন, এক্ষেত্রে সেটা বোঝা সম্ভব হয় না। কয়জন গ্রাহকের কাছে সেটি পৌঁছেছে, গ্রাহক কেমন সাড়া দিচ্ছে এগুলো পরিমাপ করা যায় না।

যেমন আপনি টেলিভিশনে একটি বিজ্ঞাপন দিয়েছেন বা মাইংকিং করে প্রচারণা চালাচ্ছেন। কিন্তু কয়জন মানুষ টিভিতে সেই বিজ্ঞাপনটি দেখেছে বা কয়জন মাইকিংটা শুনেছে সেটা আপনি নিশ্চিতভাবে জানতে পারবেন না। তাই বর্তমানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীরাই অনলাইন মার্কেটিং এর দিকে বেশি ঝুকছে।

তারপরেও অফলাইন মার্কেটিং কিছু ক্ষেত্রে অনেক বেশি সাশ্রয়ী। এতে কম খরচে অনেক গ্রাহকের কাছে পণ্যের প্রচারণা চালানো যায়। অফলাইন মার্কেটিংয়েরও কয়েকটি ধাপ রয়েছে। নিচে সেগুলো বর্ণনা করা হলো :

রেডিও মার্কেটিং

ইলেকট্রনিক মিডিয়াগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরাতন মিডিয়াগুলোর একটি হচ্ছে রেডিও। তেমনি মার্কেটিংয়ের পুরাতন প্রক্রিয়াগুলোর একটি হচ্ছে রেডিও মার্কেটিং। একটা সময় এর জনপ্রিয়তা ছিলো তুঙ্গে। কারণ তখন অন্য ইলেকট্রনিক মিডিয়া গুলো তেমন জনপ্রিয় ছিলো না, অনেকগুলোর আবির্ভাবও হয় নি তখনো। তাই মানুষের বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম ছিলো রেডিও৷ যখন রেডিওতে পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করা হতো তখন সেটি অনেক মানুষের কাছে পৌঁছাতো আর মানুষ সেটির ব্যাপারে জানতে পারতো৷

এখনো যে এটি ব্যবহার করা হয় না তা নয়, এখনো এটি বিজ্ঞাপনের অন্যতম মাধ্যম। তবে এখন মানুষ অন্য ইলেকট্রনিক মিডিয়াগুলোর দিকে বেশি ঝুকে পরার কারণে রেডিও মার্কেটিং আর আগের মতো কার্যকরী নয়। আরেকটি মূল সমস্যা হচ্ছে রেডিও মার্কেটিংয়ে কেবলমাত্র প্রচারণাই শোনা যায়, কিন্তু পণ্যটি স্বচক্ষে দেখার সুযোগ হয় না। তাই গ্রাহক দ্বিধা-দ্বন্দ্বে থাকেন সেটি নিয়ে যে পণ্যটি আসলে কেমন হবে, কেমন সেবা দিবে। তবে স্বল্প খরচ এবং একরকম কোনো কষ্ট ছাড়া ই প্রচারণা চালাতে চাইলে রেডিও মার্কেটিং এর বিকল্প নেই।

টেলিভিশন মার্কেটিং

বর্তমানে অফলাইন মার্কেটিংয়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত, জনপ্রিয় এবং কার্যকরী মার্কেটিং কৌশল হলো টেলিভিশন মার্কেটিং৷ রেডিও মার্কেটিং এর চেয়ে এটি তূলনামূলক নতুন এবং অনেক বেশি কার্যকরী।

এই মার্কেটিং প্রক্রিয়ায় টেলিভিশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয়। পুরো দিনই এই বিজ্ঞাপন প্রচার হতেই থাকে। যার কারণে যে যখনই টেলিভিশনের সামনে বসে তখনই তার সেটা চোখে পরে। আরেকটি বড় সুবিধা হচ্ছে এই ক্ষেত্রে প্রচারণা শোনার পাশাপাশি পণ্যটি স্বচক্ষে দেখাও যায়। তাই গ্রাহক সবকিছু দেখেশুনে সুবিধা-অসুবিধা বুঝে পণ্য নিতে পারেন।

মোবাইল মার্কেটিং

মোবাইল অ্যাপস, ফোন কল, এসএমএস, এমএমএস ইত্যাদির মাধ্যমে যে মার্কেটিং বা প্রচারণা চালানো হয় তাকে বলা হয় মোবাইল মার্কেটিং। যদিও এটি অনলাইন ও অফলাইন দুইভাবেই করা সম্ভব, তবে তার মধ্যে অফলাইন মার্কেটিংই বেশি জনপ্রিয়। বিশেষ করে এসএমএস মার্কেটিং ও ফোন কল মার্কেটিং আজকাল বহুল ব্যবহৃত।

অফলাইন মোবাইল মার্কেটিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান প্রথমে কোনো সিম কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। পরে ঐ সিম কোম্পানি তাদের সকল গ্রাহকদের কাছে ঐ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বা তার পণ্যের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে ফোন কল, এসএমএস বা এমএমএস পাঠায়। যার বিনিময়ে ঐ সিম কোম্পানিকে কিছু অর্থ দেওয়া হয়। আর আজকাল যেহেতু সবার হাতে হাতেই মোবাইল, তাই প্রচারণার একটি ভালো প্রক্রিয়া এটি। তাছাড়া এই প্রক্রিয়ায় অল্প সময়ে অনেক বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পণ্যের বিজ্ঞাপন পৌঁছে যায়।

বিলবোর্ড মার্কেটিং

মার্কেটিংয়ের আরেকটি বহুল প্রচলিত কৌশল হলো বিলবোর্ড মার্কেটিং৷ রাস্তার ধারে, কোনো বড় প্রতিষ্ঠান বা রেস্টুরেন্টের পাশে, পার্ক বা উদ্যানের পাশে বিলবোর্ড লাগিয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া অনেক পুরাতন মার্কেটিং কৌশল। আজকাল ইলেকট্রনিক বিলবোর্ডও বের হয়েছে। এর গঠনটি এতো সুন্দর করে সাজানো যে সেখানে পণ্যটি দেখানোর পাশাপাশি সেটির ব্যাপারে বিস্তারিতও চলে আসে। তাই মানুষ রাস্তায় বের হলেই সেটি সবার চোখে পরে।

এই মার্কেটিং কৌশলেও কিছু জিনিস মেনে চলতে হয়। নিজের জায়গা ব্যতিত অন্য কোথাও বিলবোর্ড লাগিয়ে বিজ্ঞাপন প্রচার করতে চাইলে প্রথমে অনুমতি নিতে হবে। অতঃপর নিজেদের বোঝাপড়ার মাধ্যমে সেটি সুরাহা করে তারপর বিজ্ঞাপন দিতে হয়। তবে মানুষের নজরে আসার ভালো একটি মার্কেটিং কৌশল এটি।

লাইভ ডেমোনেসট্রেশন মার্কেটিং

মার্কেটিং এর সবচেয়ে নিরাপদ এবং অন্যতম কার্যকরী কৌশল হলো লাইভ ডেমোনেসট্রেশন মার্কেটিং। এই ক্ষেত্রে গ্রাহককে সরাসরি সামনাসামনি পণ্য দেখিয়ে সেটির ব্যাপারে জানানো হয়। পরবর্তীতে গ্রাহক সবকিছু শুনে সেটি যাচাই বাছাই করার সুযোগ পান। গ্রাহক নিজেই সেটি সরাসরি স্বচক্ষে দেখে সেটির ব্যাপারে জানতে পারেন, তাই এই ক্ষেত্রে কোনো রকম ঝুঁকি থাকে না।

এই লাইভ ডেমোনেসট্রেশনটি ঐ প্রতিষ্ঠানে বা তাদের শো-রুমে বা কোথাও জায়গা ভাড়া নিয়ে করা হয়। এই কৌশলে একজন গ্রাহক শুধু যে একটি বা দুটি পণ্যের ব্যাপারে জানতে পারেন তা নয়, বরং তাদের অন্যান্য সেবার মান কেমন, গ্রাহকদের সাথে তাদের ব্যবহার কেমন সবকিছুই স্বচক্ষে দেখা যায়। তাদের উপস্থাপনা, ব্যবহার ও পণ্য দেখে গ্রাহক সন্তুষ্ট হলে পরবর্তীতে তারা আবারও সেই প্রতিষ্ঠানের পণ্য কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

এর বাইরেও আরো অনেক অফলাইন মার্কেটিং কৌশল রয়েছে৷ যেমন মাইকিং, পোস্টারিং, ব্যানার লাগানো ইত্যাদি। তবে অন্যান্য কৌশলগুলোর তুলনায় এগুলো অনেক কম কার্যকরী।

কীভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখবেন?

কীভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখবেন

বর্তমান যুগের তুমুল প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসায়িক পরিসিস্থিতে আপনাকে টিকে থাকতে হলে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের বিকল্প নেই। তবে এই ক্ষেত্রে অনেকেই বিশেষ করে নতুন উদ্যোক্তারা এটা নিয়ে চিন্তায় পরে যান যে তারা তো ডিজিটাল মার্কেটিং কীভাবে করতে হয় তা জানেন না, তারা কীভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখবেন। আমরা চেষ্টা করবো এই দুঃশ্চিন্তাগুলো দূর করতে।

ডিজিটাল মার্কেটিং কর‍তে চাইলে আপনাকে সর্বপ্রথম জানতে হবে ডিজিটাল মার্কেটিং কী এবং এটি কী কী রকম হতে পারে। এগুলো আপনি জানতে পারেন অনলাইনে লাইভ ক্লাস করে বা ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখে বা সরাসরি কোনো কোর্সে ভর্তি হয়ে। তাছাড়া আজকাল বেশ কিছু বই ও পিডিএফ ও বের হয়েছে। এছাড়াও ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে অনেকগুলো ভালো ভালো ব্লগ ও আছে, সেখান থেকেও ডিজিটাল মার্কেটিং শেখা সম্ভব৷ কীভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখবেন সে ব্যাপারে কিছুটা ধারণা নিচে দেওয়া হলো :

ডিজিটাল মার্কেটিং টিউটোরিয়াল:

ইউটিউব(YouTube)

ইউটিউব-YouTube

ইউটিউব হলো যেকোনো বিষয় শেখার এমন একটা প্ল্যাটফর্ম যেখান থেকে আপনি টিউটোরিয়াল ভিত্তিক ভিডিও পাবেন এবং সেগুলো দেখে খুব সহজেই যেকোনো কিছু শিখতে পারবেন। আপনি যেটাই শিখতে চান না কেন, হোক ডিজিটাল মার্কেটিং বা অন্য যেকোনো কিছু, ইউটিউব আপনাকে অসংখ্য টিউটোরিয়াল দেখাবে, সেখান থেকে আপনি আপনার পছন্দ মতো টিউটোরিয়াল বেছে নিতে পারবেন।

ইউটিউব ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের টিউটোরিয়ালের ভান্ডারে পরিপূর্ণ একটি প্লাটফর্ম। আপনি বাংলা, ইংরেজি যে ভাষাতেই শিখতে চান না কেন, ইউটিউবে একটি সার্চ করলেই তা মুহূর্তের মাঝেই আপনার সামনে এসে যাবে। বড় বড় ডিজিটাল মার্কেটাররা বেশিরভাগই ইউটিউবে টিউটোরিয়াল দেখেই ডিজিটাল মার্কেটিং শিখেছেন এবং তারা সকলেই নতুনদের পরামর্শ দেন যেন ইউটিউবে টিউটোরিয়াল দেখে। এটিই ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার সবচেয়ে সহজ এবং কার্যকরী প্লাটফর্ম। তার চেয়ে বড় কথা হলো এই সুবিধা পেতে আপনাকে কোনো পয়সা খরচ করতে হবে না, সম্পূর্ণ বিনামূল্যে আপনি এই সেবাটি পাবেন।

প্রতিনিয়ত অসংখ্য মানুষ বিভিন্ন ভাষাতে ইউটিউবে টিউটোরিয়াল ভিডিও প্রকাশ করছে। তার মধ্যে জনপ্রিয় কয়েকটি ইউটিউব চ্যানেলের নাম নিচে দেওয়া হলো :

  • হাবস্পট(Hubspot)
  • গুগল এনালাইটিক্স(Google Analytics)
  • নীল প্যাটেল(Neil Patel)
  • ডিজিটালমার্কেটার(DigitalMarketer)
  • গুগল সার্চ সেন্ট্রাল(Google Search Central)
  • ব্যাকলিঙ্কো(Backlinko)
  • মোয(Moz)
  • প্যাট ফ্লীন(Pat Flynn)
  • কোযায়(Koozai)
  • এসএমএ মার্কেটিং(SMA Marketing)

অবশ্যই পড়বেন

বাংলাদেশ থেকে ইউটিউব মনিটাইজেশন

ফ্রি ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার আরেকটি সহজ উপায় হলো ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স করা। এই কোর্স গুলো করে আপনি ঘরে বসেই খুব সহজে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে পারবেন। ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার বেশ কিছু ওয়েবসাইট এবং ই-লার্নিং প্লাটফর্ম রয়েছে যেখান থেকে কোর্স করে সহজেই ডিজিটাল মার্কেটিং শেখা যায়৷ এই কোর্স গুলো ফ্রি বা বিনামূল্যের আবার পেইড বা টাকা দিয়ে করতে হয় – দুই রকমই আছে। তাই আপনাকে নিয়মিত প্লাটফর্মগুলোতে চোখ রাখতে হবে যে কখন বিনামূল্যে কোর্স করার সুযোগ দিচ্ছে। অন্যথায় আপনি এই সুযোগ টি হারাবেন। তাই আপনাকে নিয়মিত সেখানে প্রবেশ করতে হবে যদি আপনি বিনামূল্যে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে চান।

ফ্রি ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার বেশ কিছু প্লাটফর্ম রয়েছে। যেমন :

বহুব্রীহি(Bohubrihi)

পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশেও বেশ কিছু জনপ্রিয় ই-লার্নিং প্লাটফর্ম রয়েছে। তার মধ্যে বহুল জনপ্রিয় একটি প্লাটফর্ম হলো বহুব্রীহি৷ বহুব্রীহিতে ডিজিটাল মার্কেটিং সহ অনেক রকম কোর্সই রয়েছে। সেখান থেকে আপনি খুব সহজেই কোর্স গুলো করে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে পারবেন। কোর্স গুলো ভালো মতো করলে আপনি খুব সহজেই কাজ শিখতে পারবেন।

বহুব্রীহিতে পেইড এবং আনপেইড দুইরকম কোর্সই আছে। বিনামূল্যে কোর্স করতে চাইলে আপনাকে নিয়মিত সেটির খবরাখবর রাখতে হবে।

লার্নিং বাংলাদেশ(Learning Bangladesh)

বাংলাদেশের আরেকটি জনপ্রিয় ই-লার্নিং প্লাটফর্ম হলো লার্নিং বাংলাদেশ৷ এখান থেকে আপনি বাংলা ভাষাতেই ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স করতে পারবেন। এই প্লাটফর্মে এতো সহজ, সাবলীল ভাবে বোঝানো হয় যে আপনি খুব সহজেই বিষয় টা আয়ত্ত করে ফেলতে পারবেন।

বহুব্রীহির মতো লার্নিং বাংলাদেশও প্রায়ই বিনামূল্যে কোর্স করার সুযোগ দেয়। সেক্ষেত্রে আপনাকে নিয়মিত প্লাটফর্ম টিতে নজর রাখতে হবে যাতে করে আপনি সুযোগ টি নিতে পারেন।

ইউডেমি(Udemy)

বিশ্বজুড়ে আজ অসংখ্য ই-লার্নিং প্লাটফর্ম রয়েছে। সেরকমই একটি বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় ই-লার্নিং প্লাটফর্ম হলো ইউডেমি। বিশ্বের যেকোনো জায়গা থেকেই আপনি এই প্লাটফর্মের কোর্স গুলো করতে পারবেন। ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স গুলোও এখানে খুব সুন্দর করে সাজানো আছে। কোর্স গুলো ইংরেজি ভাষায় করা, তাই আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন। যদি আপনি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের নাড়ী-নক্ষত্র জানতে চান তাহলে ইউডেমি ই হতে পারে আপনার পছন্দের বিকল্প৷

ইউডেমি একটি বৈশ্বিক প্লাটফর্ম হলেও এটিও মাঝে মাঝে ফ্রি কোর্স করার সুযোগ দেয়। তাই বিনামূল্যে কোর্স করতে যখনই সুযোগ আসে তখনই আপনার সুযোগ টি লুফে নিতে হবে।

কোর্সেরা(Coursera)

বিশ্বের আরেকটি জনপ্রিয় ই-লার্নিং প্লাটফর্ম হলো কোর্সেরা। পৃথিবীর অসংখ্য শিক্ষার্থী প্রতিনিয়তই এখান থেকে বিভিন্নরকম কোর্স করছে৷ কোর্সেরার হাজার হাজার কোর্সের মধ্যে অন্যতম হলো ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স। ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয় টি একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খুব সুন্দর করে এখানে দেখানো হয়েছে। বিশ্বের বড় বড় মার্কেটার দের অনেকেই স্বীকার করেন যে কোর্সেরার কোর্সটি তাদের অনেক উপকারে এসেছে।

কোর্সেরা কখনো বাৎসারিক, কখনো ছয় মাসিক, কখনো মাসিক হিসেবে ফ্রি কোর্স করার সুযোগ দেয়। বিশ্বমানের এই কোর্সটি করতে আপনাকে সবসময় প্লাটফর্মটিতে চোখ রাখতে হবে।

রিলায়েবল সফট(Reliable Soft)

আরেকটি জনপ্রিয় বৈশ্বিক ই-লার্নিং প্লাটফর্ম হলো রিলায়েবল সফট। অন্যান্য জনপ্রিয় বৈশ্বিক প্লাটফর্ম গুলোর মতো এখানেও কোর্স গুলো সম্পূর্ণ ইংরেজি ভাষায় করা। প্রায়ই তারা ফ্রি কোর্স করার সুযোগ দেয়। বিশেষ করে ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্সে প্রায়শই ফ্রি বা ৭০% পর্যন্ত ছাড় থাকে। এই মূল্য ছাড় পেতে আপনাকে সবসময়ই প্লাটফর্মগুলোতে নজর রাখতে হবে।

এগুলোর বাইরেও আরো কিছু জনপ্রিয় ই-লার্নিং প্লাটফর্ম রয়েছে যেখান থেকে প্রায়ই ফ্রি কোর্স করার সুযোগ দেওয়া হয়। যেমন :

  • ইডিএক্স(edX)
  • মাস্টারমাইন্ড(Mastermind)
  • ডিজিটাল মার্কেটিং(Digital Marketing)
  • স্কিল শেয়ার(Skill Share) ইত্যাদি
ডিজিটাল মার্কেটিং ব্লগ

ডিজিটাল মার্কেটিং ব্লগ

অনেকেই আছেন যারা বিভিন্ন সমস্যার কারণে অনলাইন কোর্স বা টিউটোরিয়াল দেখতে পারেন না। তারা কীভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখবেন তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পরেন। তাদের জন্য সহজ একটি সমাধান হলো ডিজিটাল মার্কেটিং ব্লগ। অনেকে হয়তো অবাক হবেন কথা টি শুনে, কিন্তু এটাই সত্য।

ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে অসংখ্য ব্লগপোস্ট রয়েছে। বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষাতেই এটি নিয়ে ব্লগপোস্ট রয়েছে। আপনি আপনার স্বাচ্ছন্দ্য অনুযায়ী যেটা সুবিধে পড়তে পারেন।

তবে আপনি যদি ভালো ইংরেজি জানেন সেক্ষেত্রে আপনার জন্য ভালো হয় ইংরেজি ব্লগ গুলো পড়লে। কারণ পৃথিবীর বড় বড় মার্কেটারদের অনেকেই প্রতিনিয়ত ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে ব্লগ লিখছেন। আপনি যদি তাদের ব্লগ গুলো পড়েন তাহলে আপনি জানতে পারবেন কীভাবে তারা ডিজিটাল মার্কেটিং শিখেছেন, কীভাবে কী করেছেন। নতুন যারা ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে চায় তাদের জন্য তারা প্রতিনিয়তই নানা পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

তাছাড়া ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের বর্তমান অবস্থা কেমন, ভবিষ্যতে কী পরিবর্তন আসতে পারে, ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার কেমন সবকিছুই আপনি তাদের পোস্ট পড়ে জানতে পারবেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে অসংখ্য ব্লগার অসংখ্য ব্লগ লিখেছে৷ তন্মধ্যে জনপ্রিয় কয়েকটি ব্লগ হলো :

  • স্মার্ট ব্লগার(Smart Blogger)
  • জেফবুলাস(Jeff Bullas)
  • কপিব্লগার(Copy Blogger)
  • ব্যাকলিঙ্কো(Backlinko)
  • সার্চ ইঞ্জিন জার্নাল(Search Engine Journal)
  • সার্চ ইঞ্জিন ওয়াচ(Search Engine Watch)
  • নীল প্যাটেল(Neil Patel)
  • কন্টেন্ট মার্কেটিং ইন্সটিটিউট(Content Marketing Institute)
  • ব্লগিং উইজার্ড(Blogging Wizard)
  • ইয়োস্ট ব্লগ(Yoast Blog)
  • এসইও বুক(SEO Book)
  • মোজ ব্লগ(Moz Blog)
ডিজিটাল মার্কেটিং বই

বই কে বলা হয় মানুষের সবচেয়ে কাছের বন্ধু। কারণ বই এমন একটি জিনিস যেখান থেকে সবসময়ই আপনি কিছু না কিছু শিখতে পারবেন, হোক গল্পের বই বা পড়ার বই। আজকাল ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের উপরও অসংখ্য বই আছে। আপনি সেই বইগুলো পড়লে সেখান থেকেও ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে ধারণা পেতে পারেন।

কীভাবে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং শিখবেন – এই প্রশ্নের উত্তর যদি বই হয়, সেক্ষেত্রে সবচেয়ে উত্তম হলো ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে লেখা কোনো বই কিনে ফেলা। আপনি যখন বই কিনে ফেলবেন, তখন সেটি আপনার কাছে সবসময় থাকবে। কিন্তু লাইব্রেরি বা কারো থেকে নিয়ে পরলে সেটি আপনাকে একসময় ফেরত দিতে হবে। পরবর্তীতে দেখা গেলো কখনো আপনার আবার বই দরকার হচ্ছে, কিন্তু তখন আপনি আর সেটি হাতের কাছে পাচ্ছেন না। তাই সবচেয়ে ভালো হয় বই কিনে ফেললে। ভালো ডিজিটাল মার্কেটার হতে চাইলে এই সামান্য খরচ তো করা ই যায়!

আপনি চাইলে বই অনলাইনেও অর্ডার করতে পারেন বা নিজে গিয়ে কিনে নিতে পারেন। তাছাড়া গুগলে অনেকগুলো বই ফ্রি-তেও পাওয়া যায়। আপনি গুগলে যেয়ে আপনার সেই কাঙ্খিত বইয়ের নাম লিখে সার্চ করলে সেটি পেয়ে যাবেন আর আপনি সেখান থেকে বইটি ডাউনলোড করে নিতে পারেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে খুব জনপ্রিয় কয়েকটি বই রয়েছে। যেমন :

  • ইউটিলিটি(Utility)
  • এপিক কন্টেন্ট মার্কেটিং(Epic Content Marketing)
  • দ্যা আর্ট অফ এসইও(The Art Of SEO)
  • নিউ রুলস অফ মার্কেটিং এন্ড পিআর(New Rules Of Marketing And PR)
  • ডিজিটাল মার্কেটিং বুকস(Digital Marketing Books)
  • পারমিশন মার্কেটিং(Permission Marketing)
  • ডিজিটাল মার্কেটিং ফর ডামিজ(Digital Marketing For Dummies)
  • ডিজিটাল মার্কেটিং মাস্টারমাইন্ড(Digital Marketing Mastermind)
ডিজিটাল মার্কেটিং পিডিএফ

কীভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখবেন – এই প্রশ্নের আরেকটি ভালো উত্তর হলো পিডিএফ ফাইল পড়া। আজকাল দেখা যায় বই কেনার বদলে মানুষ পিডিএফ ডাউনলোড করে পড়ার দিকেই বেশি ঝুকছে। ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে অসংখ্য বই আছে যেগুলো পিডিএফ আকারে পাওয়া যায়। আপনি খুব সহজেই সেগুলো গুগলে সার্চ করে পেয়ে যাবেন।

পিডিএফের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এটি আপনার মোবাইল বা কম্পিউটারে ডকুমেন্ট আকারে জমা থাকে। ধরুন আচমকা আপনাকে কিছু দেখতে হলো, কিন্তু আপনার আশেপাশে বই নেই। সেক্ষেত্রে আপনি খুব সহজেই আপনার মোবাইলের ডকুমেন্টসে গিয়ে সেটি দেখে নিতে পারবেন।

পিডিএফ ফাইল গুলোর মধ্যে বেশিরভাগই বিনামূল্যে পাওয়া গেলেও কিছু আবার অর্থ দিয়ে নিতে হয়। আপনি আপনার সুবিধে মতো সেটা বাছাই করে নিতে পারবেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং ট্রেনিং

ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার আরেকটি ভালো উপায় হলো কোনো ট্রেনিং সেন্টারে ভর্তি হওয়া বা অভিজ্ঞ কারো থেকে ট্রেনিং নেওয়া। আজকাল অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান বা অনেক অভিজ্ঞ রা ই ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের ট্রেনিং দেন৷ আপনি চাইলে সেখানে ভর্তি হয়েও ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে পারেন।

তবে এই প্রতিষ্ঠান বা ট্রেনার নির্বাচনের সময় আপনাকে কয়েকটি বিষয় জানতে হবে, আপনার নিজের জন্যই। সেগুলো হলো :

  • যে প্রতিষ্ঠান থেকে ট্রেনিং করছেন সেই প্রতিষ্ঠানের অতীত রেকর্ড, বর্তমান পরিস্থিতি।
  • ট্রেনারের পরিচয়, অতীত অভিজ্ঞতা।
  • প্রতিষ্ঠান বা ট্রেনার দ্বারা ট্রেনিং প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মতামত।
  • ঐ প্রতিষ্ঠান বা ট্রেনার দ্বারা ট্রেনিং প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা বর্তমানে কোথায় আছে, কেমন কাজ করছে ইত্যাদি।
সেমিনার বা ওয়েবিনার থেকে

সেমিনার শব্দটির সাথে আমরা কম-বেশি সবাই ই পরিচিত। আর যখন কোনো সেমিনার অনলাইনে করা হয় তখন তাকে বলা হয় ওয়েবিনার। প্রায়শই বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সেমিনার বা ওয়েবিনার হয়ে থাকে। বিশেষ করে আজকাল সবকিছুই অনলাইন কেন্দ্রিক হয়ে যাওয়াতে ওয়েবিনার অনেক বেশি হচ্ছে।

বর্তমান যুগে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের চাহিদা অনেক বেড়ে যাওয়াতে ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়েও প্রায়শই সেমিনার বা ওয়েবিনার হচ্ছে। খোঁজ নিলে দেখবেন আপনার আশেপাশেই এই বিষয়ক সেমিনার বা ওয়েবিনার হচ্ছে। ওয়েবিনারে তো বিশ্বের যেকোনো জায়গা থেকেই আপনি যোগ দিতে পারেন। বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বড় বড় মার্কেটার রা প্রায়ই ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে ওয়েবিনার করে থাকেন।

আপনি যদি সেখানে যোগ দেন তাহলে আপনি তাদের ঘটনা জানবেন, তারা কীভাবে এই জায়গায় এসেছে এটা জানতে পারবেন। সাথে এটাও বুঝতে পারবেন যে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে একটা ভালো ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে আপনার কী করতে হবে, কীভাবে এগোতে হবে।

সেমিনারে সরাসরি যোগ দেওয়া গেলে বিষয়গুলো আরো ভালো মতো বুঝবেন। ওয়েবিনারে অনেক সময় ইন্টারনেট সংযোগের সমস্যার কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ হয়তো আপনি হাতছাড়া করে ফেলবেন। সেমিনারে আপনি সরাসরি যোগ দিলে সবকিছুই একদম ভালো মতো বুঝতে পারবেন, পাশাপাশি আপনার কোনো জিজ্ঞাসা থাকলে সেটাও করতে পারবেন।

তবে সেমিনার বা ওয়েবিনার যেটা ই হোক, এখান থেকে আপনি কেবল ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের প্রাথমিক অংশ টুকু জানতে পারবেন। বাকি কাজ আপনাকে নিজ চেষ্টা আর অন্যান্য সাহায্য নিয়ে কর‍তে হবে। তবে এখান থেকে আপনি কিছু দরকারী পরামর্শ আর উদ্দীপনা পাবেন যা আপনাকে খুব সাহায্য করবে।

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের গুরুত্ব

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের গুরুত্ব

আপনি যখন কোনো ব্যবসায় হাত দিবেন তখন সেটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সঠিক পরিকল্পনার পাশাপাশি দরকার ঠিক মতো মার্কেটিং করা বা প্রচার-প্রচারণা চালানো। আপনার পণ্য বা সেবার কথা যদি মানুষ না জানে, সেক্ষেত্রে দেখা যায় আপনি খুব ভালো কৌশল বা পরিকল্পনা করলেও সেটা বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারছে না।

তাই আপনার ব্যবসায়িক উন্নতি করতে চাইলে ঠিকঠাক মতো বিজ্ঞাপন দেওয়া বা প্রচার প্রচারণা চালানো খুবই দরকার। আর এই ক্ষেত্রে আপনাকে সাহায্য করতে পারে ডিজিটাল মার্কেটিং। ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের গুরুত্ব এক কথায় অপরিসীম৷ তন্মধ্যে কিছু নিচে বর্ণনা করা হলো :

খুব সহজে এবং অল্প সময়ে ব্যবসায়িক উন্নতি ঘটানো

ডিজিটাল মার্কেটিং হচ্ছে এমন একটি মার্কেটিং কৌশল যা থেকে খুব সহজেই আপনি আপনার কাঙ্খিত গ্রাহক বা টার্গেট অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছাতে পারবেন এবং তাদের কাছে আপনার সেবা বা পণ্যের কথা জানাতে পারবেন। বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় অর্ধেকের বেশি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে এবং দিন দিন এই সংখ্যা টা বাড়ছে। তাই আপনি যখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে আপনার পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করা শুরু করবেন তখন তা একইসাথে অসংখ্য মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে।

এখন আপনার প্রাথমিক লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। আপনি আপনার টার্গেট অডিয়েন্স বা কাঙ্খিত গ্রাহকের কাছে পৌঁছাতে পেরেছেন৷ কিন্তু তারা সেটা কতটুকু গ্রহণ করবেন সেটা নির্ভর করছে আপনি প্রচারণা বা মার্কেটিং টা কতটা ভালো মতো করতে পারছেন তার উপর। আপনি যদি আকর্ষণীয় কন্টেন্ট বানিয়ে আপনার গ্রাহকদের মুগ্ধ করতে পারেন তাহলে গ্রাহকও আপনার পণ্যটির ব্যাপারে উৎসাহিত হবেন।

এতে করে গ্রাহকের সাথে আপনার একটা ভালো সম্পর্ক তৈরি হবে। দেখা যাবে পরবর্তীতেও ঐ গ্রাহকরা আপনার পণ্য বা সেবার প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করছে। এতে করে খুব সহজেই এবং অল্প সময়ে আপনার ব্যবসায়িক উন্নতি ঘটবে।

কম খরচে প্রচারণা চালানো

মার্কেটিংয়ের যে পুরাতন পদ্ধতিগুলো রয়েছে যেমন মাইকিং করা, পোস্টার, ব্যানার টাঙানো এগুলো অনেক ব্যয়বহুল এবং ককষ্টসাধ্য ব্যাপার। কারণ অসংখ্য মানুষের কাছে পৌঁছাতে হয়, তাই খরচ আর ভোগান্তিও বেড়ে যায়। এতো কষ্টের পরেও ঠিক কয়জন গ্রাহকের কাছে তা পৌঁছেছে সে ব্যাপারে সঠিক কোনো ধারণা পাওয়া যায় না। কিন্তু ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে সামান্য খরচে কম সময়ের মধ্যেই লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়া যায়।

বর্তমান যুগ টা পুরোপুরিই অনলাইনের যুগ হয়ে যাওয়াতে, ইন্টারনেটের মাধ্যমে আপনি খুবই কম খরচে আপনার কাঙ্খিত গ্রাহকের কাছে আপনার পণ্য বা সেবা নিয়ে পৌঁছে যেতে পারবেন। ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের যে ধাপগুলোর কথা আমরা পূর্বে উল্লেখ করেছি সেগুলো আপনাকে এই ক্ষেত্রে সাহায্য করবে। যেমন সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং, সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজশন, কন্টেন্ট মার্কেটিং ইত্যাদি। এগুলোতে খরচ ও পরিশ্রম অনেক কম, কিন্তু সেই তুলনায় লাভ অনেক বেশি।

সুবিধা মতো বিজ্ঞাপন বা অ্যাডভার্টাইসমেন্ট তৈরি করা

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এখানে আপনি আপনার প্রয়োজন মতো, পণ্যের চাহিদা অনুযায়ী বিজ্ঞাপন বানাতে পারেন এবং দরকার হলে সেটা পরিবর্তন ও করতে পারেন। আপনি যখন আপনার বিজ্ঞাপনটি প্রচার করবেন তখন দর্শক সেটি দেখবে এবং তাদের মূল্যবান মন্তব্য করবে। তাদের কথা থেকে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার বিজ্ঞাপনটি কতটা কার্যকরী হয়েছে বা কোথায় উন্নতি বা পরিবর্তন করতে পারবেন। সে অনুযায়ী আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।

এই ক্ষেত্রে আরেকটি বড় সুবিধা হচ্ছে আপনি যখন অনেকগুলো আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন তৈরি করবেন তখন সেগুলো অসংখ্য গ্রাহকের কাছে পৌঁছাবে । গ্রাহকের সাড়া দেখে আপনি প্রয়োজনে আরো বিজ্ঞাপন তৈরি করতে পারেন। এতে করে আপনার পণ্যের প্রচারও হবে, পাশাপাশি গ্রাহকেরও আপনার পণ্য নিয়ে কৌতুহল জাগবে। আর গ্রাহকের তা পছন্দ হলে পরবর্তীতেও গ্রাহক আপনার পণ্য নিতে উৎসাহিত হবে।

যা বিনিয়োগ করেছেন তার কয়েকগুণ বেশি লাভ পাবেন

অনেকেই মনে করেন যে, ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে যা বিনিয়োগ করা লাগে সেই তুলনায় লাভ নেই বললেই চলে। আসলে ব্যাপারটা পুরোই উল্টো। আপনি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের পিছনে যত অর্থ বিনিয়োগ করবেন তারচেয়ে অনেক বেশি ফেরত বা রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট(ROI) পাবেন।

আপনি যখন কোনো একটা বিজ্ঞাপন বানাচ্ছেন, তাতে আপনাকে কিছু অর্থ বিনিয়োগ করতে হচ্ছে। কিন্তু সেই বিজ্ঞাপনটি যখন অল্প সময়ের মধ্যে অনেকগুলো গ্রাহকের কাছে পৌঁছে যাবে, তখন যদি গ্রাহকের সেটি পছন্দ হয়, তখন দেখবেন গ্রাহকরা পণ্যটি ক্রয় করতে চাচ্ছে। যেহেতু আপনি গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী বিজ্ঞাপন তৈরি বা পরিবর্তনের সুযোগ পাচ্ছেন, তাই গ্রাহকের তা পছন্দ হওয়ার সসম্ভাবনা অনেক বেশি। দেখা যাবে আপনি যা বিনিয়োগ করেছেন তা সুদে আসলে কয়েকগুণ ফেরত পাচ্ছেন।

ধরুন, আপনি আপনার কোনো পণ্যের প্রচারণা চালাতে ১০ হাজার টাকা ব্যয় করেছেন। এখন সেই পণ্যটি যদি ভোক্তার পছন্দ হয়, তখন তারা সেটি বেশি বেশি কিনতে চাচ্ছে। দেখা যাবে আপনি ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে ১ লক্ষ টাকা ফেরত চেয়েছেন। সুতরাং, আপনার খরচের ১০ গুণ লাভ আপনি পাচ্ছেন।

তাই এই ক্ষেত্রে আপনার লাভ ব্যতীত ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

ব্র্যান্ড হিসেবে তৈরি হওয়া

আপনার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান যখন প্রতিষ্ঠানের তৈরি কোনো পণ্য দ্বারা পরিচিত পেয়ে যায়, তখনই আপনার কোম্পানি ব্র্যান্ডে পরিণত হয়। যেমন : লাক্স(LUX), ডাভ(DOVE), সানসিল্ক(SUNSILK) এই সমস্ত পণ্যকে আমরা তাদের নামেই বেশি চিনি। কিন্তু এই পণ্যগুলো মূলত বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান “ইউনিলিভার”(UNILEVER) এর তৈরি পণ্য। কিন্তু তাদের তৈরিকৃত পণ্যগুলো এতোটা খ্যাতি পেয়েছে যে এগুলোর কারণে এই প্রতিষ্ঠানটি একটি ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে।

আপনি চাইলে আপনার প্রতিষ্ঠানকেও ব্র্যান্ডের পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারেন ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সাহায্য নিয়ে। ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কারণে এই ব্র্যান্ড সৃষ্টির কাজ টা অনেক সহজ হয়ে গেছে। পূর্বের মতো পুরাতন পদ্ধতিতে মানুষকে আর কষ্ট করতে হয় না। যেমনটা বলেছি, ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সবচেয়ে বড় সুবিধে হলো আপনি কম সময়ে অনেক বেশি মানুষের কাছে আপনার পণ্যের বিজ্ঞাপন পৌঁছে দিতে পারবেন। আপনার বিজ্ঞাপন দেখে গ্রাহক যদি ভালো-মন্দ মন্তব্য করবে। আর সেটা দেখে যদি আপনি আপনার পণ্যের পরিবর্তন বা উন্নতি ঘটাতে পারেন, গ্রাহকের চাহিদা মতো পণ্য বানাতে পারেন, তাহলে একটা সময় আপনার প্রতিষ্ঠানটি ব্র্যান্ডে পরিণত হবে।

এটি আমাদের জন্য গর্বের বিষয় যে আজকাল আমাদের বাংলাদেশের অনেক প্রতিষ্ঠানই ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে। যেমন কোহিনূর কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেডের তৈরিকৃত পণ্য “তিব্বত” আজ বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়। এই তিব্বতের কারণে এই প্রতিষ্ঠান টি ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে। আপনি চাইলে আপনার প্রতিষ্ঠান টিকেও ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের আশ্রয় নিয়ে ব্র্যান্ডে পরিণত করতে পারবেন।

নির্ভুলতার সাথে লক্ষ্য পূরণ

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে এমন কিছু কৌশল রয়েছে যা থেকে আপনি গ্রাহকের তথ্য, গ্রাহকের আগ্রহ, গ্রাহকের পছন্দ-অপছন্দ, গ্রাহক কোন ডিভাইস ব্যবহার করে সবকিছুই খুব সহজে জেনে নিতে পারবেন। অতঃপর সেখান থেকে আপনি আপনার টার্গেট অডিয়েন্স বাছাই করে নিতে পারবেন।

আর যখন আপনি আপনার টার্গেট অডিয়েন্স পেয়ে যাবেন তখন আপনি তাদের আগ্রহ অনুযায়ী, তাদের চাওয়া পাওয়া অনুযায়ী পণ্য তৈরি বা পরিবর্তন করতে পারবেন। তাতে করে গ্রাহক আপনার উপর সন্তুষ্ট হবে এবং ভবিষ্যতেও আপনার প্রতিষ্ঠানের তৈরি পণ্য নিতে উৎসাহিত হবে। এভাবে আপনি আপনার কাঙ্খিত লক্ষ্য বা সফলতার সিড়ি তে পৌঁছে যাবেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং করে অর্থ উপার্জন

ডিজিটাল মার্কেটিং করে অর্থ উপার্জন

ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার

বর্তমানে সবকিছু অনলাইন কেন্দ্রিক হয়ে যাওয়াতে মানুষ আজকাল দোকানে যাওয়ার কষ্টটাও করতে চায় না, অনলাইনেই পণ্য দেখে পছন্দ হলে অর্ডার করে ফেলে। যার কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোকেও তাদের অনলাইন কার্যক্রমে আরো বেশি মনোযোগী হতে হচ্ছে। এজন্য তাদের প্রচুর ডিজিটাল মার্কেটার প্রয়োজন হয়। একটি প্রতিষ্ঠানের পণ্যের প্রচার-প্রচারণা ঠিক মতো চালাতে হলে তার জন্য অনেক বেশি মার্কেটিং করতে হয়। শুধু মার্কেটিং করলেই হলো না, তা কতটা কার্যকরী হচ্ছে, গ্রাহক সেটিকে কীভাবে নিচ্ছে এমন অনেক বিষয় বিবেচনায় আনতে হয়।

এই সবকিছু মাথায় রেখে প্রতিষ্ঠানগুলো যোগ্য ব্যক্তির খোঁজ করে। কিন্তু দেখা যায় পূর্ব অভিজ্ঞতা বা ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে নূন্যতম কোনো ধারণা না থাকার কারণে বেশিরভাগই নিয়োগ পান না। এই ক্ষেত্রে আপনার যদি ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে নূন্যতম ধারণা থাকে, আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং কী, কীভাবে করতে হয় এসব বুঝেন তাহলে আপনি বাকি প্রার্থীদের চেয়ে অনেক এগিয়ে যাবেন। বিশেষ করে আপনার যদি কোনো ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স করা থাকে, সেক্ষেত্রে এটি আপনার উপরিলাভ বা বোনাস পয়েন্ট হিসেবে কাজ করবে।

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ধাপগুলো সম্পর্কে আমরা পূর্বে আলোচনা করেছি। আপনি আপনার দক্ষতা, আগ্রহ, অভিজ্ঞতা আর প্রয়োজন অনুযায়ী সবগুলো ধাপই বেছে নিতে পারবেন বা আপনার পছন্দ মতো কিছু বা একটি বেছে নিতে পারবেন। অতঃপর সেগুলো বা সেটি নিয়ে কাজ করবেন।

প্রধানত দুইভাবে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে ক্যারিয়ার গড়তে পারেন। সেগুলো হলো :

  • চাকরি করে
  • ফ্রিল্যান্সিং করে

আপনার সময় আর সুযোগ হলে আপনি দুইটিই করতে পারেন।

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে চাকরির ক্যারিয়ার

আজকাল খুব সহজেই ডিজিটাল মার্কেটিং থেকে অর্থ উপার্জন করা যায়। বেশিরভাগ বড় বড় ডিজিটাল মার্কেটিং প্রতিষ্ঠান প্রায়ই দক্ষ মার্কেটারের খোঁজে থাকে। আপনি যদি নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারেন তাহলে আপনি খুব সহজেই ঐ সমস্ত প্রতিষ্ঠানে ঢুকে যেতে পারবেন।

আর যখনই আপনি কোনো প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হবেন, তখন যদি আপনি সেখানে আপনার দক্ষতা দেখাতে পারেন, আকর্ষণীয় মার্কেটিং কৌশল বা পরিকল্পনা করে যদি গ্রাহকের মন জয় করে নিতে পারেন, তাহলে পরবর্তীতে আপনি আরো কাজ পাবেন। এভাবে ক্রমেই আপনার আয় বাড়তে থাকবে।

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এখানে আপনি অনেক কম পরিশ্রমেই অনেক বেশি আয় করতে পারবেন। ধরুন আপনি এমন একটি কন্টেন্ট তৈরি করলেন যা দর্শক খুব পছন্দ করলো এবং পণ্যটি অনেক বিক্রি হলো। তাহলে প্রতিষ্ঠান আপনাকে ভালো মানেরই অর্থ দিবে। ভালো কাজ দেখাতে পারলে আপনার পদোন্নতিও সুনিশ্চিত। আর পদোন্নতি হলে আপনার বেতনও বাড়বে। দেখবেন রাতারাতি আপনি অনেক বেশি আয় করতে পারছেন।

অথবা ধরুন আপনার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানে নতুন কেউ যোগ দিয়েছে বা আপনি অন্য মার্কেটপ্লেসের কাউকে রাজি করিয়ে আপনাদের প্রতিষ্ঠানে নিয়ে আসতে পেরেছেন, সেক্ষেত্রেও আপনি একটা “রেফার বোনাস” পাবেন। এভাবে আপনি যতজনকে কাজে আনতে পারবেন ততো আপনি এখান থেকে আয় করতে পারবেন। আর তারা যদি ভালো কাজ দেখাতে পারে, সেক্ষেত্রেও আপনি কিছুটা সম্মানী পাবেন। এরকম বিভিন্নভাবেই আপনি অর্থ উপার্জন কর‍তে পারবেন।

আপনি যখন কোনো প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে চাকরিতে ঢুকবেন, তখন সেখানে কী হিসেবে ঢুকবেন, এর পরবর্তী ধাপগুলো কেমন হবে তা অনেকটাই নির্ভর করছে ঐ প্রতিষ্ঠানের উপর। তবে সাধারণত দেখা যায় সবাইই জুনিয়র ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ হিসেবেই চাকরিতে প্রবেশ করে।

পরবর্তীতে নিজের দক্ষতা দেখাতে পারলে আপনি সিনিয়র ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ হিসেবে পদোন্নতি পাবেন। এভাবে ক্রমান্বয়ে মার্কেটিং ম্যানেজার, সিনিয়র মার্কেটিং ম্যানেজার, অ্যাসিসটেন্ট মার্কেটিং ডিরেক্টর এবং একসময় মার্কেটিং ডিরেক্টর হিসেবে পদোন্নতি পাবেন৷

আবার আপনার বিশেষত্ব অনুযায়ী আপনার পদের নামও পরিবর্তিত হতে পারে। যেমন : আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং নিয়ে কাজ করে থাকেন, তাহলে আপনার পদের নাম মার্কেটিং ম্যানেজার থেকে হয়ে যাবে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার।

আপনার ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে চাকরির ক্যারিয়ার কেমন হবে, আপনি কোন পর্যায়ে যেতে পারবেন তা পুরোটাই নির্ভর করছে আপনার মেধা, শ্রম আর ইচ্ছার উপর। আপনি যদি আপনার চেষ্টা চালিয়ে যান, তাহলে অবশ্যই আপনার ক্যারিয়ার একসময় একটা ভালো অবস্থানে যেয়ে দাঁড়াবে।

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার

ফ্রিল্যান্সিং হলো এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে আপনি বিশ্বের যেকোনো জায়গা থেকেই আপনার সুবিধা আর দক্ষতা অনুযায়ী কাজ করতে পারবেন। সারা বিশ্বে আজ ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের চাহিদা অনেক বেড়ে যাওয়ায় তাদের অনেক বেশি ডিজিটাল মার্কেটারের প্রয়োজন হয়। আর ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্ম থেকে আপনি পৃথিবীর যেই দেশেই থাকুন না কেন ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে কাজ করতে পারবেন। আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জানতে চান তাহলে ফ্রিল্যান্সিং কী এবং কিভাবে ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা যায় এ বিষয়ে আমাদের পোস্টটি পড়তে পারেন।

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়লে আপনি বেশ কিছু সুবিধা পাবেন। যেমন :

  • আপনার নিজের ইচ্ছা, পছন্দ-অপছন্দ, প্রয়োজন, সময়-সুযোগ অনুযায়ী কাজ বেছে নিতে পারবেন।
  • এক বা একাধিক ক্ষেত্র থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
  • মানুষের সাথে যোগাযোগ ও নেটওয়ার্কিংয়ের দক্ষতা বাড়বে।
  • আপনার পোর্টফলিও অনেক বেশি সমৃদ্ধশালী হবে।

তবে এই ক্ষেত্রে কিছু ভোগান্তিও রয়েছে। যেমন :

  • পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়া শুরুতে কাজ পাওয়া কষ্টসাধ্য।
  • প্রতিনিয়ত দক্ষ ও অভিজ্ঞ মার্কেটারদের সাথে প্রতিযোগিতা করে মার্কেটপ্লেসে টিকে থাকতে হয় এবং কাজের খোঁজ কর‍তে হয়।
  • আপনি কতটা উপার্জন করতে পারবেন তা পুরোপুরিই নির্ভর করছে আপনার অভিজ্ঞতা, কাজের দক্ষতা, যোগাযোগের দক্ষতা এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারছেন কিনা তার উপর।
  • অতিরিক্ত চাপ নিয়ে দীর্ঘ সময় কাজ করার ফলে শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তির সৃষ্টি হয়, যা পরবর্তীতে কাজ পেতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।

তবে কিছু অসুবিধা থাকা সত্ত্বেও আপনি যদি আপনার ইচ্ছাশক্তি আর পরিশ্রম অব্যাহত রাখতে পারেন তাহলে আপনি ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে ভালো একটি ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারবেন।

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের বেশ কিছু প্লাটফর্ম রয়েছে যেখান থেকে আপনি খুব সহজেই কাজ পেতে পারেন, যেমন :

  • ফ্রিল্যান্সার.কম(Freelancer.com)
  • আপওয়ার্ক(Upwork)
  • ফাইভার(Fiver)

বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে যত গুলো ক্যারিয়ার সুযোগ রয়েছে, তা অন্য কোথাও হয়তো নেই। আপনাকে শুধু ধৈর্য্য ধরে নিজের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। তাহলে আপনি অবশ্যই এখান থেকে ভালো কিছু করতে পারবেন।

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে বাংলাদেশ

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে বাংলাদেশ

বর্তমানে গোটা বিশ্বই প্রযুক্তি আর আধুনিকতার ছোঁয়াতে বদলে গেছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে তাল মিলাতে হলে আমাদেরকেও প্রযুক্তি আর আধুনিকতার আশ্রয় নিতে হবে। অন্যথায়, অন্য দেশগুলোর তুলনায় আমরা পিছনে থেকে যাবো।

বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশের জন্য এটি মোটেও সহজ কোনো কাজ নয়। তবে আশার কথা এই যে, বাংলাদেশ ও প্রতিনিয়ত প্রযুক্তি আর যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। যেমন : ডিজিটাল মার্কেটিং। ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় অনেক এগিয়ে আছে। এমনকি বাংলাদেশের অনেক ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশল গোটা বিশ্বে সুনাম কুড়িয়েছে।

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে বাংলাদেশের পথচলা কখনোই সহজ ছিলো না। বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ, এখানে চাকরির বাজার কেমন তা আমরা সবাইই জানি। অসংখ্য মানুষকে চাকরির খোঁজে প্রতিনিয়ত রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে হচ্ছে। তাই মানুষকে বাধ্য হয়ে বিকল্প কিছু খুঁজতে হয়। আর ডিজিটাল মার্কেটিং এমন একটি ক্ষেত্র যেখানে একইসাথে অনেকগুলো সুযোগ রয়েছে। আপনার যেটাই পছন্দ, যেটা আপনার দক্ষতার সাথে যায় সেটাই আপনি বেছে নিতে পারবেন। তাই বর্তমানে বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ এই ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের দিকে ঝুঁকে পরছে।

কয়েক বছর আগেও বাংলাদেশের ডিজিটাল মার্কেটিং এতো জনপ্রিয় ছিলো না। কিছু বড় বড় প্রতিষ্ঠান ও কিছু বড় বড় মার্কেটারদের চেষ্টায় বর্তমানে বাংলাদেশ ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে একটি ভালো অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে৷ তাদের অনুপ্রেরণায় এখন অসংখ্য মানুষ ডিজিটাল মার্কেটিং কর‍তে আগ্রহী হচ্ছে।

বাংলাদেশে ডিজিটাল মার্কেটিং জনপ্রিয় হওয়ার কারণে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে। একটি সমীক্ষার মতে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। তাই এখানে ডিজিটাল মার্কেটিং করে অনেক বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব। আর যতই প্রচারণা বাড়ছে ততই মানুষ ঐ মার্কেটারদের পণ্যের প্রতি আগ্রহী হচ্ছে। এভাবে প্রতিষ্ঠানগুলো একটি ভালো পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে।

আর প্রচারণা বাড়ার পাশাপাশি মানুষেরও ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে। আরো অনেক মানুষ ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের দিকে ঝুঁকছে। এভাবেই বাংলাদেশ বর্তমান বিশ্বে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে ভালো সুনাম কামাচ্ছে।

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ভবিষ্যৎ

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ভবিষ্যৎ

আমরা আসলে এখন সম্পূর্ণ ইন্টারনেট নির্ভর একটি ডিজিটাল যুগে বসবাস করছি। এই ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ফলে বর্তমানে যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে, তাতে হয়তো একসময় মানুষ দোকান বা বাজারে যাওয়া পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়ে সবকিছুই অনলাইনে অর্ডার করবে। যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের চিন্তাভাবনা, জীবনযাত্রার মানও পরিবর্তিত হচ্ছে। তাই এরকম কিছু হলেও অবাক হওয়ার কিছুই নেই।

মানুষ এখন চিন্তা করে যে সে যদি দোকানে যেয়ে কিছু কিনতে চায়, তাহলে তার অনেক সময় নষ্ট করছে। আর বর্তমানে অনলাইনে সবকিছুই পাওয়া যায়৷ তাছাড়া পণ্যগুলোর প্রচার-প্রচারণা এতো সুন্দর করে করা হয় যে মানুষ খুব সহজেই সেখান থেকে নিজের পছন্দমতো পণ্য বেছে নিয়ে অর্ডার করে ফেলতে পারে।

অনলাইন মার্কেটপ্লেস পুরো টা ই ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের উপর নির্ভরশীল। আপনার ব্যবসার অগ্রগতি কেমন হবে তা পুরোটাই নির্ভর করছে আপনি কত ভালোভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং করছেন তার উপর৷ যদি আপনি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে দক্ষ না হয়ে থাকেন তাহলে বর্তমান বাজারে আপনার টিকে থাকাই কঠিন হয়ে পরবে। আর ভবিষ্যতে হয়তো আপনার ব্যবসায়িক অস্তিত্বই বিলীন হয়ে যাবে।

আজকাল মানুষ যেকোনো কিছু কিনতে গেলে আগে গুগলে সার্চ করে। সেখান থেকে কন্টেন্ট দেখে ভালো লাগলে যদি সেটা পছন্দ হয় তাহলে সেটা অর্ডার করে। এখনি মানুষ দোকানে যাওয়ার কষ্ট করতে চায় না, একটা সময় হয়তো পুরোটাই অনলাইনভিত্তিক হয়ে যাবে। তাই আপনাকে নিজের ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখতে হলে অবশ্যই ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে অভিজ্ঞ হতে হবে। অন্যথায়, ভবিষ্যতে আপনার ব্যবসার প্রসার ঘটানো সম্ভব হবে না।

বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের চাহিদা যে হারে বেড়েছে, সময়ের সাথে তা আরো বাড়বে। তাই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোরও অনেক বেশি মার্কেটারের প্রয়োজন হবে। ফলে সেখান থেকে অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। আর আপনি যদি দক্ষ ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারেন, তাহলে বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো নিজ থেকেই আপনাকে খুঁজে নিবে। এতে করে আপনি নিজের ক্যারিয়ারে তো এগিয়ে যাবেনই, পাশাপাশি আপনার মতো দক্ষ মার্কেটারদের চেষ্টায় বাংলাদেশও ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

শেষ কথা

ডিজিটাল মার্কেটিং বর্তমানে এমন একটি অবস্থানে এসে পৌঁছেছে যে আপনার ব্যবসায়িক প্রসার ঘটাতে এটির কোনো বিকল্প নেই। তাই সকল ব্যবসায়ী বা উদ্যোক্তাদেরই এখন ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে রাখা উচিত। আর যদি আপনি নিজের প্রচেষ্টা আর ধৈর্য্যের সাথে কাজ করে যেতে পারেন, তাহলে আপনি একজন সফল ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবেন।

অবশ্যই পড়বেন

ওয়েব ডিজাইন কী

ব্যাক এন্ড ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কী

ফ্রন্ট এন্ড ডেভেলপমেন্ট কী

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কী

ফুল-স্ট্যাক ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কী

তৌহিদ

ABOUT TOUHID

One thought on “ডিজিটাল মার্কেটিং কী? কীভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখবেন?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *